জাতীয়

নির্বাচনী বছরে নতুন কোনো প্রকল্প নিচ্ছি না

ঢাকা, ০৬ অক্টোবর – আমাদের চলমান প্রকল্পগুলোর অধিকাংশই শেষের পথে। সামনে নির্বাচনী বছর।

আগামী বছর শেষের দিকে অথবা ২০২৪ এর শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নতুন কোনো প্রকল্প হাতে নিচ্ছি না।
রোববার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীতে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের টঙ্গী ফ্লাইওভারের হাউসবিল্ডিং-টঙ্গী ফায়ার সার্ভিস অংশে ঢাকামুখী ২টি লেন উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, বিআরটি প্রকল্পটি প্রসারিত হয়ে সদরঘাট পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমি এই প্রস্তাব নাকচ করেছি। কারণ একটি বিআরটি প্রকল্পের চাপ সইতে পারছি না, যখন এটা ঢাকা সিটিতে চলে যাবে, তখন যানজটে মানুষের হাহাকার লেগে যাবে। তাই এটা নাকচ করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণে মেগা প্রজেক্ট পদ্মা সেতু আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। মেট্রোরেলের কাজও অনেক দূর এগিয়েছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেলের কাজ প্রায় শেষের পথে। আশা করছি ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আমরা উদ্বোধন করতে পারব। আগামী ২৬ নভেম্বর ভার্চ্যুয়ালি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী টানেলের যেটুকু কাজ শেষ হয়েছে সেটুকু নিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। তবে এটা ডিসেম্বর নাগাদ চালু হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় সাফল্যের মুকুটে আগামীকাল আরেকটি পালক যুক্ত হচ্ছে। চট্টগ্রাম, বরিশাল এবং সিলেট দেশের এই তিন বিভাগে মোট ১০০টি ব্রিজ উদ্বোধন হবে।

তিনি বলেন, কাউলা থেকে বনানী পর্যন্ত আমাদের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং এমআরটি লাইন ওয়ানের কাজও এগিয়ে যাচ্ছে।

সামনে নির্বাচন, আগামী বছর শেষের দিকে অথবা ২৪ এর শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অনুযায়ী আমরা নতুন কোনো প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি না।

একটি প্রকল্পে গাজীপুরের মানুষ অনেক দুর্ভোগ সহ্য করেছেন। তবে, বিআরটি প্রকল্পের শুধু গাজীপুর অংশেই পাঁচটি ফ্লাইওভার রয়েছে। এই প্রকল্পের কাজটি যাতে দ্রুত হয়, সেজন্য আমরা তিনটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছিলাম। কিন্তু কাজ শুরু করার পর তারা ঘাটে ঘাটে সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

মন্ত্রী বলেন, একটা প্রকল্পে ভুল-ত্রুটি হতেই পারে, কিন্তু বিএনপি শুধু সমালোচনাই করে গেছে। তাদের সঙ্গে জাতীয় পার্টিও চিল্লাচিল্লি করেছে। বাস্তবে বিএনপি দেশে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারেনি। এর আগে উত্তরবঙ্গে কিছু কাজ হয়েছে, কিন্তু বিএনপি কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন করতে পারেনি৷

তিনি বলেন, গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পে আমরা আজ মাত্র দুটি লাইন উন্মুক্ত করে দিচ্ছি। আমি মনেকরি এতে দুর্ভোগ অনেকাংশে কমবে। সামনে কোনো বিপর্যয় আসলে জনগণের আবার যাতে দুর্ভোগে পড়তে না হয় সেজন্যই দুটি লাইন উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই বিরাট প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২০ কিলোমিটার। মোট ব্যয় ৪২৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি ১৪২৫ কোটি। প্রকল্প সাহায্য ২৮৪২ কোটি। প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ফরাসি উন্নয়ন ব্যাংক। এ প্রকল্পটি তিনটি সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে একটি হল সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর, সেতু কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সরকার প্রকল্প অধিদপ্তর। বিমানবন্দর থেকে আজমপুর টঙ্গী কলেজ থেকে গাজীপুর ১৬ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্ত করনে ৭টি ফ্লাইওভার ও ১৯টি বিআরটি স্টেশন রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ২৫ কিলোমিটার ড্রেন ও দুটি টার্মিনাল। এছাড়া বিমানবন্দরে আন্ডারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এখন পর্যন্ত এই কাজ ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। টঙ্গী থেকে উত্তরা পর্যন্ত ১০ লেনের সেতুটির একটি পার্ট হয়ে গেছে, আরেকটি পার্টের কাজ চলমান রয়েছে। এই লাইনটি চালু হওয়ার ফলে বাকি কাজগুলো আরও গতিশীল হবে। সৌর বিদ্যুৎ চালিত সড়ক বাতির কাজটিও বাস্তবায়ন হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, এতদিন গাজীপুরবাসী অনেক দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন এজন্য আমি খুবই দুঃখিত। যারা বিমান মিস করছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে বসে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে বলছি স্যরি।

চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধ করা হয়েছে, অন্যান্য সড়কগুলোতেও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধের কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে একটি পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে আমরা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নিয়ে একটি বৈঠক করেছি। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার সঙ্গে অনেক মানুষ জড়িয়ে রয়েছে, তারা দরিদ্র। তাই এগুলো বন্ধ না করে নীতিমালার মধ্যে এনে আমরা ফিডার রোডের একটা ব্যবস্থা করতে পারি। এভাবেই আমরা চিন্তাভাবনা করছি এবং এই সে অনুযায়ী নীতিমালা তৈরি হচ্ছে।

সূত্র: বাংলানিউজ
এম ইউ/০৬ অক্টোবর ২০২২

Back to top button