সারে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা, ০১ নভেম্বর – সংকট দেখা দিয়ে যাতে কৃষি উৎপাদনে প্রভাব না পড়ে তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়েছে। আইএমএফের শর্তে ভর্তুকি কমানোর বিষয়টি আসছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে ৮ হাজার কোটি টাকা করে সারে ভর্তুকি দিচ্ছিলাম, সেটা গত অর্থবছর দিয়েছি ২৮ হাজার কোটি টাকা। এবার আমরা জুন পর্যন্ত এস্টিমেট (প্রাক্কলিত ব্যয়) করেছি, আমাদের দিতে হবে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা কোথা থেকে আসবে? হয় কোনো গুপ্তধন লাগবে, নয়তো আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ লাগবে! বাংলাদেশ এ টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবে?’
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি বলেছি। উনি বলেছেন, এটা তোমার চিন্তার বিষয় নয়, আমরা সার ও কৃষি উৎপাদনে কোনো ঝুঁকিতে যাবো না। কৃষির উৎপাদনটাকে আমাদের সাসটেইন (দীর্ঘস্থায়ী) করতে হবে। যদি ৪৬ হাজার কোটি টাকা লাগে, এটাই আমরা দেব; তুমি সার কিনো।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমি আশ্বস্ত করতে চাই, ইনশাআল্লাহ সারের কোনো সংকট হবে না। প্রকৃতি যদি আমাদের সহায়ক থাকে, বোরোতেও কোনো ঝুঁকি হবে না, এটুকু আমি আপনাদের বলতে পারি।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী পড়ে না থাকে। আমরা সব দিক থেকেই লক্ষ্য করছি। চালের দাম ৪২ টাকা নির্ধারণ করা ঠিক হয়েছে কিনা এমন এক প্রশ্ন উঠেছে। আমরা একটা জিনিস হিসাব করেছি। কৃষকের উৎপাদন কতো টাকা পড়ে। তার ওপর লাভ ধরেই আমরা দাম নির্ধারণ করেছি। আর আপনারা যেটা বললেন ৫০, ৫৫ টাকা সেটাতো শেষ বাজারে। এর মাঝে অনেক পথ পেড়িয়ে দাম বাড়ে। ৪২ টাকা যে দাম নির্ধারণ করেছেন সেটা কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করেই করা হয়েছে। গতবার আমরা ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। তারপরও আমরা লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি সংগ্রহ করতে পেড়েছি। অতএব চিন্তা করার কিছু নাই। যে দাম নির্ধারণ করেছি এতে কৃষকরা সন্তুষ্ট থাকবে।
ধান এবং চালের উৎপাদন খরচ কত পড়বে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে যে তথ্য পেয়েছি তাতে দেখা গেছে চালের উৎপাদন খরচ পড়বে ৪০ টাকার কাছাকাছি। সে হিসাব করে ২টাকা বেশি ধরে ৪২ টাকা করা হয়েছে। আর ধানের উৎপাদন খরচ পড়বে ২৬ টাকা ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে দেড় টাকা লাভ ধরে ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ টাকা। এই দামে কোনো অবস্থাতেই কৃষকরা বঞ্চিত হবে না।
সূত্র: জাগো নিউজ
এম ইউ/০১ নভেম্বর ২০২২