ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড ম্যাচে বৃষ্টি বাধা
ক্যানবেরা, ২৬ অক্টোবর – টস হলো নির্ধারিত সময়েই। তবে বাগড়া দিল বৃষ্টি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি তাই শুরু হলো দেরিতে। তবে দুই দফার বৃষ্টিতে দেরিতে বল মাঠে গড়ানোর পর ফের বন্ধ হয়ে গেছে খেলা।
মেলবোর্নে বুধবার দিনের প্রথম ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায়। বৃষ্টির বাগড়ার আগে টসে জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার।
এরপর দুই দফার বৃষ্টিতে খেলা শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২০ মিনিট পর। আবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে আইরিশরা ১.৩ ওভারে বিনা উইকেটে তুলেছে ১১ রান।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ফেভারিটের তালিকায় রাখছেন অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই। জস বাটলাররা আসরটা শুরুও করেছেন প্রত্যাশিত জয়ে। যদিও গত শনিবার আফগানিস্তানকে ১১২ রানে গুটিয়ে দিয়েও খুব সহজে ম্যাচ শেষ করতে পারেননি তারা। তবে অঘটন তো আর কিছু ঘটেনি। বলা যায় মোমেন্টামটাও পেয়ে গেছে দলটি। সেই ধারা বজায় রাখতে এবার বড় মঞ্চে ‘জায়ান্ট কিলার’খ্যাত আয়ারল্যান্ড চ্যালেঞ্জ জিততে হবে ইংলিশদের।
টি-টোয়েন্টিতে এর আগে একবারই মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। ২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ম্যাচটি অবশ্য বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল। পল কলিংউডের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ডকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ৮ উইকেটে ১২০ রানের বেশি করতে দেয়নি আইরিশরা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ড বৃষ্টির বাগড়ায় পড়ে। ৩.৩ ওভারে দলটি ১ উইকেটে ১৪ রান করার পর ম্যাচ ভেসে যায়। গ্রুপ পর্বে সেবার ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে অপর দলটি ছিল উইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে হারের স্বাদ পেয়েছিল দুদলই। তাতে গ্রুপ পর্ব শেষে তাদের পয়েন্ট ছিল সমান ১ করে। তবে নেট রান রেটে আইরিশদের পেছনে ফেলে গ্রুপ রানার্স হয়ে সুপার এইটের টিকিট কেটেছিলেন ইংলিশরা। পরে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে হওয়া সেই আসরে ট্রফিটাই জিতে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। প্রথমবারের মতো যা তাদের কোনো বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তোলা।
ইংলিশদের বিপক্ষে লড়াই বরাবরই বাড়তি প্রেরণা আয়ারল্যান্ডের জন্য। এমনকি মাঠের বাইরের নানান বিষয়ও জড়িয়ে যায় সেখানে। দেখা দেয় জাতিগত লড়াই। ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার অবশ্য ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছেন, মাঠের বাইরের কোনো কিছু নিয়ে ভাবনার অবকাশ নেই তাদের। তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে আইরিশদের হালকা করে দেখার সুযোগ দেখেন না তিনি, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্যাচই কঠিন। যে কারও বিপক্ষে যে কোনো ম্যাচে ঘটতে পারে যে কোনো কিছুই। একজন খেলোয়াড়ই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তাই এই ম্যাচটি আমাদের জন্য খুবই কঠিন হতে যাচ্ছে। যখনই আপনি কাউকে হালকা করে দেখবেন বা প্রতিপক্ষকে সম্মান দেখাবেন না, তখনই আপনাকে ভুগতে হবে।’
বিশ্ব মঞ্চে আইরিশরা একাধিকবার নিজেদের সামর্থ্য দেখিয়েছে। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তো ইংলিশরাই তাদের শিকার ছিল। ২০০৭ সালের আসরে হারিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানকে। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০০৯ সালের পর প্রথমবার দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছে তারা। এরই মধ্যে অবশ্য প্রমাণ করেছে তারা আসলে কতটা ভয়ংকর। যদিও সুপার টুয়েলভ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়াই জমাতে পারেনি। হেরেছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। তবে প্রথম পর্বে উইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে ওই হারে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে আসর শুরু করলেও উইন্ডিজ ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় সুপার টুয়েলভের টিকিট এনে দিয়েছে বালবার্নির দলকে। লঙ্কানদের বিপক্ষে হারের হতাশা ভুলে এবার দলটা আরেক সাবেক চ্যাম্পিয়নদের চ্যালেঞ্জ জানাতে চায়। আইরিশ কোচ হাইনরিখ মালান ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলে গেছেন সেটিই, ‘আমরা একটা দীর্ঘ সময় ধরে সাদা বলের ক্রিকেটে তাদের (ইংল্যান্ড) বিপক্ষে খেলিনি। তাই এটা দারুণ একটা চ্যালেঞ্জ হবে। আমরা দেখিয়েছি যে আমাদের কিছু খেলোয়াড় আছে যারা তাদের নাম আলোকিত করেছে এবং এটা সেই সুযোগ, যার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।’
সূত্র: দেশ রূপান্তর
আইএ/ ২৬ অক্টোবর ২০২২