কক্সবাজার

উত্তাল সাগর: সেন্টমাটিনে আটকা ৪০০ পর্যটক

কক্সবাজার, ২৩ অক্টোবর – আরও শক্তি অর্জন করে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) যে কোন সময় বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এদিকে সাগর উত্তাল থাকায় সেন্টমাটিনে আটকা পড়া চার শতাধিক পর্যটককে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে জাহাজের মালিক ও জেলা প্রশাসন। অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজার, মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সেন্ট মার্টিনে সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। উত্তাল জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বেলা দুইটা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি।

তিনি আরও বলেন, কাল সকাল থেকে জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে এবং যেসব পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন, তাদের আজ বেলা সাড়ে তিনটায় জাহাজে ওঠে কক্সবাজার ফিরে যেতে অনুরোধ জানিয়ে দ্বীপে মাইকিং করা হয়েছে। মাইকিং করছে জাহাজ মালিকদের সংগঠন স্কোয়াব ও ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক)।

এমভি কর্ণফুলী জাহাজের কক্সবাজারের আঞ্চলিক পরিচালক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কারণে সেন্ট মার্টিনে যেসব পর্যটক আটকে পড়েছেন, সবাই এই জাহাজের যাত্রী। সাগর উত্তাল হলেও আটকে পড়া পর্যটকদের কক্সবাজারে ফিরিয়ে আনা হবে। রাত ৯টার মধ্যে জাহাজটি পুনরায় কক্সবাজার পৌঁছার কথা রয়েছে।

সেন্ট মার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দ্বীপের তিন শতাধিক নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট জেটি ঘাটে নোঙর করা আছে। সাগর উত্তাল থাকায় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে স্থানীয় লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি রোধে সাইক্লোন শেল্টার ও বহুতল ভবনগুলো খোলা রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দ্বীপের মানুষের জন্য শুকনা খাবার, পানিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে উপকূলের সব কটি জেলার জন্য ভারী বৃষ্টি ও বন্যার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে এরই মধ্যে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব এলাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছ। এলাকাগুলোয় এরই মধ্যে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক বলেছেন, সম্ভাব্য ঝূঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সব জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমাদের ভার্চ্যুয়াল মিটিং হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটির সঙ্গে মিটিং করেছেন। সিপিপিকে প্রস্তুতি গ্রহণ ও সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা মাইকিং করছে। জেলা পর্যায়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাকালীন মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য প্রত্যেক জেলায় এক হাজার প্যাকেট করে শুকনো খাবার, ২৫ মেট্রিকটন চাল, ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুকনো খাবারের মধ্যে ড্রাই কেক ও বিস্কুট মজুদ আছে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ই‌উ/২৩ অক্টোবর ২০২২

Back to top button