জানা-অজানা

‘ব্ল্যাক ডেথ’ মহামারি: ৭০০ বছর পরেও মানুষের স্বাস্থ্যে রয়েছে প্রভাব

প্রায় ৭০০ বছর পরেও মানুষের স্বাস্থ্যে প্রভাব রেখে চলেছে ইতিহাসের কুখ্যাত ‘ব্ল্যাক ডেথ’। মহামারিটি মানবদেহে জিনগত যে চিহ্ন এঁকে দিয়েছিল, তা থেকে আজও মুক্তি মেলেনি মানবজাতির। অন্তত বিশেষজ্ঞরা সেটাই বলছেন।

১৩০০ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে ইউরোপ ও আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হানা দেওয়া বিউবোনিক প্লেগই ব্ল্যাক ডেথ হিসেবে পরিচিত।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রায় ২০ কোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল ব্ল্যাক ডেথের কারণে। এর ভিত্তিতে ওই প্লেগের মড়ককেই মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী মহামারি বলা হয়।

ব্ল্যাক ডেথের ছোবল থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষের কঙ্কাল পরীক্ষা করে মানবদেহে এক ধরনের পরিবর্তনের খোঁজ পেয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, ওই পরিবর্তনই নাকি টিকে থাকতে সহায়তা করেছিল মানুষকে। বর্তমানের অনেক অটো ইমিউন-সংক্রান্ত রোগের সঙ্গেও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে ওই পরিবর্তনটির।

এই গবেষণায় শত শত বছরের পুরনো ২০৬টি কঙ্কাল থেকে ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন গবেষকরা। সেগুলোকে সুনির্দিষ্টভাবে মহামারির আগে, পরে এবং মধ্যবর্তী—এই তিন সময়ে বিভক্ত করতে সক্ষম হন তারা।

গবেষণাটিতে উঠে আসা ফলাফল নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এতে গবেষকরা জানিয়েছেন, শরীরে সঠিক পরিবর্তন হয়ে থাকলে বাঁচার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেত। ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অধ্যাপক লুইস ব্যারেরিও বলেন, ‘এটি অনেক বড়, ব্যাপক একটি প্রভাব। মানব জিনোমে এ ধরনের কিছু পাওয়াটা বিস্ময়কর। ’

লন্ডনে সমাধিস্থল থেকে মানুষের দেহাবশেষ নিয়ে জিনগত বিশ্লেষণে ব্যবহার করা হয়েছে।

জানা যায়, বিশেষ ওই জিন মূলত শরীরে অনুপ্রবেশকারী জীবাণুকে প্রতিহত করত এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো কার্যকরভাবে লড়াইয়ে সহায়তা করত। ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণ ছিল জিনটির। কোনোটি কাজ করেছে, কোনোটি করেনি। পরবর্তী সময়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়েছে সেগুলো।

আইএ/ ২২ অক্টোবর ২০২২

Back to top button