আ.লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকতে প্রশাসনে রদবদল করছে : নুর
ঢাকা, ২১ অক্টোবর – ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ প্রশাসনে রদবদল করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নুর বলেন, সরকার উন্নয়নের মহাসড়কের নামে দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে এসেছে। আবারো ক্ষমতা দখল করতে প্রশাসনে রদবদল করেছে। প্রশাসনের মধ্যে যারা এখন একটু বিবেক জাগ্রত করছেন, শেখ হাসিনা নিজের গদি রক্ষার জন্য তাদের বিরুদ্ধে চড়াও হচ্ছেন।
তিনি বলেন, তথ্য সচিব কিছুদিন আগে বলেছিলেন আমরা কোনো দলের পক্ষে অবস্থান নেব না। এই বক্তব্যের কারণে তার চাকরি গেছে। প্রশাসনের ভাইদের বলছি, আপনাদের একজনেরও চাকরি যাবে না যদি এখন থেকে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিন।
আগামী নির্বাচন নিয়ে এই সরকার নানা ধরনের নীলনকশা করছে— অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জোর জবরদস্তি করে বিনা ভোটে গায়ের জোরে ক্ষমতায় এসেছিল। তাদের আগামীতে সেরকম নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।
ইভিএমকে ইলেকট্রনিক ভেলকির মেশিন উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ইভিএম দিয়ে তারা ভোট ডাকাতি করে আবার ক্ষমতায় থাকার দুঃস্বপ্ন দেখছে। নির্বাচন কমিশনকে এই সমাবেশ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, ইভিএম কেনার যদি দুঃস্বপ্ন দেখলে আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না। জনগণের পয়সা দিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। বাপদাদারা ভোট দিয়েছেন আঙুল টিপে, আমরাও ভোট দেব আঙুল টিপে। কোনো ছলচাতুরী চলবে না।
নুর বলেন, সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দুই মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিয়ে বাস, লঞ্চ ফ্রি করে বিরিয়ানিসহ পিকনিক মোডে সমাবেশ আয়োজন করেও এক লাখ লোক জড়ো করতে পারেনি। ভিডিও ফুটেজ দেখুন, এক লাখ লোক জড়ো করতে পারলেও রাজনীতি ছেড়ে দেব। আর বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে দলীয় গুন্ডা-পান্ডাদের দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় হামলা করাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। পুলিশ দিয়ে হয়রানি করাচ্ছে, বাস, লঞ্চ বন্ধ করে দিচ্ছে। তারপরও লোকসমাগম ঠেকাতে পারছে না। তাদের মাথা গরম হয়ে গেছে, কী থেকে কী বলছে, তারা নিজেরাও জানে না।
নুর বলেন, জিনিসপত্রের দাম দিগুণ হয়েছে, সরকার কোনো ভ্রুক্ষেপ করছে না। কৃষি-উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। সার ও জ্বালানির দাম বাড়ায় কৃষক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, খাদ্যঘাটতি প্রকট হবে। এই সরকার গুলি করে, পারলে কামান-ট্যাংক দিয়ে জনবিক্ষোভকে বা বিরোধীমতকে দমন করার চেষ্টা করছে। কামান-ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়েও যদি দেশকে রক্ষা করা না যায়, তাহলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিলীন হয়ে যাবে।
গণসংহতি আন্দোলনের মিরপুর জোনের আহ্বায়ক মাহবুব রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ২১ অক্টোবর ২০২২