ইউরোপ

পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস

লন্ডন, ২০ অক্টোবর – মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা আর টরি এমপিদের বিদ্রোহের মুখে আজ বৃহস্পতিবার ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে প্রিন্স চালর্সের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ট্রাস। পদত্যাগের পর দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হবেন তিনি।

১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দেওয়া বক্তৃতায় ট্রাস বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় আমি স্বীকার করছি, যে ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছিলাম তা পূরণ করতে পারিনি। তাই আমি মহামান্য রাজার সঙ্গে কথা বলে তাকে জানিয়েছি, আমি কনজারভেটিভ পার্টির নেতার পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’

যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও প্রথা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষ নেতার পদ থেকেও অপসারিত হবেন ট্রাস। তার স্থলাভিষিক্ত হিসাবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিতর্কিত ‘মিনি-বাজেট’ নিয়ে চাপের মুখে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন তিনি। এর আগে ট্রাসের নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির অধিকাংশ সদস্য তার পদত্যাগ চেয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে মত দেন। সম্প্রতি করা এক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে।

স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়, ইউগভ নামের একটি সংস্থা সম্প্রতি এক জরিপ করে। গত ১৭-১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ওই জরিপে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ৫৩০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া কনজারভেটিভ পার্টির ৫৫ শতাংশ সদস্য বলেছেন, এই মুহূর্তে ভোট হলে তারা ঋষি সুনাককে ভোট দেবেন। বিপরীতে ট্রাসকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন মাত্র ২৫ শতাংশ। তবে ট্রাসকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান ৩৮ শতাংশ কনজারভেটিভ।

অন্যদিকে, জরিপে অংশ নেওয়া কনজারভেটিভদের ৬৩ শতাংশ লিজ ট্রাসের জায়গায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে মত দেন। ৬২ শতাংশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। আর দলের নেতা পেনি মর্ডান্টের কথা বলেছেন ৫৪ শতাংশ।

লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে মদের পার্টি কেলেঙ্কারি, উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রচণ্ড চাপের মুখে থাকা বরিস জনসন গত ৭ জুলাই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি নিতে বাধ্য হন। তার পদত্যাগের পর শুরু হয়েছিল দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বাছাই প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হন ট্রাস।

দেশটির ইতিহাসে এর আগে সবচেয়ে কম সময় অর্থাৎ মাত্র ১১৯ দিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন জর্জ ক্যানিং। ১৮২৭ সালে তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ব্রিটেনের স্বল্প সময় প্রধানমন্ত্রী থাকার রেকর্ড ছিল তার। কিন্তু মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগ করায় এখন ব্রিটেনের সবচেয়ে কম সময় প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার রেকর্ড গড়লেন ট্রাস।

সূত্র: আমাদের সময়
আইএ/ ২০ অক্টোবর ২০২২

Back to top button