সচেতনতা

ট্রমায় ভূগছেন? কীভাবে মুক্তি পাবেন?

ট্রমা শব্দটা বহু মানুষের কাছে বিশেষ ভাবে পরিচিত। ট্রমা একটা সাধারণ অসুখের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মানুষ সৃষ্ট কারণে ট্রমা হতে পারে। আবার অনেকের জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা তারা সহজে ভুলতে পারে না। কারও আবার কোন ঘটনা দেখে বা অভিজ্ঞতা থেকেও ট্রমা হতে পারে।

ট্রমায় ভূগলেও অনেকে আস্তে আস্তে জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নেন। আর যারা মানিয়ে নিতে পারেন তাদের জীবনে নানা জটিলতা দেখা দেয়। বহু শিশু আছে, যারা বড় হয়ে ওঠার পথে নানান ভাবে ট্রমা আক্রান্ত হয়, শুধুমাত্র বাড়িতে না বলার কারণে। এর ফলে পরবর্তীকালে মানসিক জটিলতা আরো বাড়ে। যা কতটা ক্ষতিকারক তার বলার অপেক্ষা রাখে না। ট্রমার কারণে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

ট্রমা থেকে বাঁচবেন কী ভাবে ?

১.শিশুদের সবকিছু বলে শেখাতে হয় না, তারা আশেপাশের পরিবেশ থেকে দেখেও শেখে। তাই শিশুর সামনে যতটা সম্ভব সংযত থাকুন। অভিভাবকের ব্যবহারও শিশুদের মনে ট্রমা তৈরি করতে পারে।

২. অনেকেই আছেন যারা সামান্য পোকা দেখলে কিংবা লিফটে আটকে পড়লে ভয় পান। তারা ট্রমার কারণে ১৪ তলা হেঁটে যান অথচ লিফটে উঠেন না। এক্ষেত্রে অনেকের বুক ধরফর করে, হাত-পা ঘেমে যায়, পিপাসা লাগে মনের মধ্যে অস্থির ভাব কাজ করে। এই ধরনের সমস্যা হলে অবশ্যই কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন।

৩. ট্রমা থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হল পারিবারিক সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়া। বয়সকালে কিংবা অবসর সময়ে বহু মানুষ ট্রমার মধ্যে চলে যান। একজন বাবা মা হিসেবে আপনাকে যেমন মানসিক এবং আর্থিক সব দিক থেকে সন্তানকে সাপোর্ট করতে হবে, তেমনি বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও একই দায়িত্ব পালন করা উচিত।

৪. সন্তানের উপর কোন কিছু জোর করে চাপিয়ে দেবেন না। তার মনের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, সব থেকে ভয়ানক হল শিশুদের ট্রমা। কারণ পরবর্তীকালে এটি একটি মানসিক রোগের বড়সড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৫. ট্রমা থেকে মুক্তি পেতে আচরণগত থেরাপি, এক্সপোজার থেরাপি সহ নানান ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। ট্রমা ব্যক্তির সামাজিক, শারীরিক কার্যকারিতা, মানসিক আবেগ এবং সুস্থতার উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।

৬.বাড়িতে বসেই ট্রমার চিকিৎসা করাতে পারেন। কোন বিপদের সময় সবসময় মাথা ঠান্ডা রাখবেন। যতটা দায়িত্ব সামলাতে পারবেন ঠিক ততটাই করুন। প্রচণ্ড মানসিক চাপ অনুভব করলে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করুন। ধীরে ধীরে শ্বাস নিয়ে এক থেকে দশ পর্যন্ত গুনুন। এইভাবে কিছুক্ষণ করলে কিছুটা হলেও মানসিক শান্তি পাবেন।

৭. যদি মনের কথা কাউকে না বলতে পারেন তাহলে সারাদিনের কাজ এবং মানসিক অশান্তির কথা ডায়েরিতে লিখে রাখুন।

কীভাবে বুঝবেন আপনি ট্রমায় আক্রান্ত ?

১. হঠাৎ করে কোনো ঘটনা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন

২. একই ঘটনা বারংবার স্মৃতিতে চলে আসা

৩. ঘুম চক্রে ব্যাঘাত

৪. বমি বমি ভাব

৫. মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা

৬. অকারণে অঝোরে ঘামা

৭. সামান্য কারণেই হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া

৮. অ্যালকোহল এবং ধূমপানে বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়া

আইএ

Back to top button