সংখ্যালঘু ভাবা হিন্দুদের হীনমন্যতা: প্রধান বিচারপতি
ঢাকা, ১৮ অক্টোবর – এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় কেন নিজেদের সংখালঘু ভাবে সে প্রশ্ন রেখে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এটা তাদের (হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের) ইনফিরিওর কমপ্লেক্সিটি (হীনমন্যতা)। ’
মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আজ সোমবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একটি মানবিক বিশ্ব’ শীর্ষক আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। সে অনুস্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিচার বিভাগের প্রধান।
২০০২ সালে ভারতের গুজরাটে দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘গুজরাটে দাঙ্গার পর আমরা সবাই সেক্যুলার হয়ে গেলাম। তখন মনে হতো গুজরাটের সরকার সেক্যুলার হলে এটা হতে দিত না। তখন একটা সেক্যুলার সরকারের কথা আমরা কল্পনা করেছি। কিন্তু আমি যখন আমাদের কথা ভাবি, তখন আমরা আর সেক্যুলার থাকি না। ’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সংবিধানে বলা আছে, এ দেশের মানুষ হিন্দু মুসলিম সবাই মিলে বাঙালি। দেশ স্বাধীন করেছে, প্রত্যেকটা নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে। কেন হিন্দুরা ভাববে, আমরা মাইনোরিটি কমিউনিটি। আমার মনে হয়, এটা তাদের ভেতর ইনফিরিওর কম্পেক্সিটি (হীনমন্যতা)। সবাই এ দেশের নাগরিক। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সব কিছু নতুন করে ভাবতে হবে। আমাদের সে পথে চলতে হবে, যে পথ রাসুল আমাদের দেখিয়ে গেছেন। আদারওয়াইজ (অন্যথায়) এই যে বিভ্রান্তি এবং অশান্তি থেকে মুক্তিতো পাবই না, পরকালে কৈফিয়ত দিতেও পারব না। ’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কোনো ইতিহাস বলে না, রাসুল (সা.) কোনো বিধর্মীকে কম্পেল (বাধ্য) করেছেন মুসলমান হওয়ার জন্য। মদিনা সনদ পৃথিবীর প্রথম লিখিত সংবিধান, সেখানে সব সম্প্রদায়ের লোক মিলে এক জাতি গঠন করার কথা বলা আছে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে তিনি বিদায় হজে বলে গেছেন। তারপরও আমরা একসঙ্গে…। আজকেও কয়েকটা মোকাদ্দমা হয়েছে, সেখানে জামিন চেয়েছে প্রতিমা ভাঙার জন্য। এটা কেন হবে?’
‘আমরা যখন মানবিকতার কথা বলি, তখন আমার কাছে মনে হয়, আমরা রাসুলকে ভুলে যাই। সূরা ফাতেহায় আমরা বলি, আমাদের সহজ-সরল পথ দেখান। এই পথ কোনটা। যে পথ রাসুল দিয়ে গেছেন। ’
আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমসহ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ বক্তা হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল। অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ১৭ অক্টোবর ২০২২