‘বাংলাদেশের উন্নতির জন্য কেউ তাবিজ পড়া দেয়নি’
ঢাকা, ১৫ অক্টোবর – স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশের উন্নতির জন্য কেউ তাবিজ পড়া-মন্ত্র পড়া দেয় নাই, এগুলো বাংলাদেশের মানুষই করেছে। আমরা বই কিনতে পারতাম না, খাবার কিনতে পারতাম না—প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সেই অবস্থা থেকে বের হয়েছি।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের দারিদ্র্য অনেক বেশি ছিল। গত ১৪ বছরে আমাদের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আমলে মাথা পিছু আয় আমাদের ছিল ৩২৯ ডলার। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে সেটি হয়েছে ৫০০-৬০০ ডলার। এখন প্রায় ৩ হাজার ডলার। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। কী নিদারুণ কষ্ট মানুষ পেত। আমি বলতে চাই—সেই অতীতকে ঘৃণা করো না, অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক বিবেচনায় হাত ধোয়ার মতো সচেতনতা জরুরি। যেহেতু আমরা হাত দিয়ে নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করি সচেতনভাবে বা নিজের অজান্তে। তাই হাত ধোয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্ত্যব্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা বলেন, হাত ধোয়ার মতো একটি বিষয়কে আরও বেশি উৎসাহিত করতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সেক্টরও এ বিষয়ে সরকারের সাথে কাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এ স্বাস্থ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
ইউনিসেফ-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি শাজা আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে এই আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ দিতে চাই। এই উদ্যোগ শিশুদের নিরাপদ স্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। প্রতি বছর ৭০০ শিশু ডায়রিয়াজনিত কারণে মারা যায়। এই মৃত্যু রোধ করা সম্ভব যদি হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরি করা যায়। আমি নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উন্নতির জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাদের আরও কঠোরভাবে ৯০ মিলিয়ন শিশুর স্কুলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করতে হবে। আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টাই এটি বাস্তবায়ন করতে সুবিধা করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুইজারল্যান্ড রাষ্ট্রদূত নাটালি চুয়ার্ড বলেন, কোভিড-১৯ এর সময়ে আমরা হাত ধোয়ার গুরুত্ব বুঝেছি। করোনাকালে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সফলতার একটি অন্যতম উদাহরণ। বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতের দিকেও নজর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এমন একটি সময় ছিল যখন মানুষ হাত ধোয়াকে গুরুত্ব দিত না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নদী, পুকুর, দিঘি এসব উন্মুক্ত জলাশয়ের পানি ব্যবহার করতো মানুষ। ফলে বিশেষ করে শীতের আগে মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতো। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি আর নেই।
সূত্র: বাংলানিউজ
এম ইউ/১৫ অক্টোবর ২০২২