জাতীয়

কোটা সুবিধা নিতে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মা বানানো সেই সোনালী আটক

কুড়িগ্রাম, ১১ অক্টোবর – মুক্তিযোদ্ধা কোটা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রে শ্বশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা বানানো গৃহবধূ সোবানলী বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (১০ অক্টোবর) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম‌্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মজনু মিয়ার আদালতে গেলে ভুল ও মিথ‌্যা তথ‌্য দিয়ে হলফনামার চেষ্টার অপরাধে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

এ ঘটনায় আদালতের বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী বাদী হয়ে গৃহবধূ সোনালী খাতুন, নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম‌্যান লিয়াকত আলী লাকু এবং উলিপুর পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) নুরুল হুদাকে আসামি করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় এজাহার দিয়েছেন।

এর আগে গৃহবধূ সোনালীর বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিতে সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে তার মুক্তিযোদ্ধা শ্বশুরকে বাবা এবং শাশুড়িকে মা দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র করার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে জাগোনিউজ২৪.কম-এ ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা পেতে স্ত্রীকে বোন বানালেন স্বামী!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সোনালী খাতুন নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটি নাওডাঙা গ্রামের আনিছুর রহমানের স্ত্রী। সম্প্রতি তার স্বামী আনিছুর চেক ডিজঅনারের (এনআই অ‌্যাক্ট) একটি মামলায় কারাগারে আছেন। সোনালীর বাবার নাম রবিউল হোসেন এবং মায়ের নাম আছমা। তার পৈতৃক নিবাস উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছের নন্দু নেফরা গ্রামে।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে অভিযুক্ত সোনালী শ্বশুর-শাশুড়ির নাম পরিবর্তন করে তার প্রকৃত বাবা-মায়ের নাম দিয়ে হলফনামা করতে যান। তার দাখিলকৃত কাগজপত্রে তিনি নাম ও জন্ম তারিখ ১৯৯৪ সাল পরিবর্তন করে নতুন জন্ম তারিখ ১৯৯০ সাল দেখিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি জন্মসনদ দাখিল করেন। তার সেই জন্মসনদের তথ‌্য ব‌্যবহার করে নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম‌্যান লিয়াকত আলী লাকু তাকে নাগরিকত্ব সনদ দেন।

এছাড়া তার দাখিলকৃত বিয়ের কাবিন নামায় দেখা যায়, কাজি কর্তৃক সরবরাহ করা কাবিন নামায় বয়সের ঘর পূরণে বাধ‌্য বাধকতা থাকলেও সেটি ফাঁকা রেখেই কাজি কাবিন নামার প্রতিলিপি সরবরাহ করেছেন। সরবরাহকৃত সব সরকারি কাগজপত্রে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় আদালত সোনালি খাতুনকে পুলিশে সোপর্দ করেন এবং আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে সোনালী, ইউপি চেয়ারম‌্যান লিয়াকত আলী লাকু এবং কাজি নুরুল হুদার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, এজাহার পেয়েছি। আটক গৃহবধূকে থানায় নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হবে।

সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ১১ অক্টোবর ২০২২

Back to top button