যেকোনো জায়গায় মদ বিক্রি-অসামাজিক কার্যকলাপ করলেই ব্যবস্থা
ঢাকা, ১০ অক্টোবর – রাজধানীর উত্তরার গরীবে নেওয়াজ অ্যাভিনিউয়ের যে বারে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল সে বারটি বৈধভাবেই চলছিল বলে দাবি করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। কিন্তু গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দাবি, বারটি অবৈধ।
বারের নাম কিং ফিশার বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে সেটি ছিল লেকভিউ রেস্টুরেন্ট।
বার নিয়ে ডিএনসি-ডিবি তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই দেশে যেকোনো জায়গায় মদ বিক্রি ও অসামাজিক কার্যকলাপ হলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব। পুলিশ বা অন্যান্য সংস্থা- আমরা নিয়মিতই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করি। আইনগত প্রক্রিয়া মেনেই আমরা কাজটা করে থাকি। ঢাকাসহ দেশের যেকোনো জায়গায় মদ বিক্রিসহ অসামাজিক কার্যকলাপ করলে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করতে পারবে। এই কাজটা আমরা সব সময় করে আসছি এবং ভবিষ্যতে করে আসবো। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে প্রজন্মকে রক্ষা করা।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিসি হারুন।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) বলেন, এখন অবৈধ বারের মধ্যে যদি উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা সারা রাত ডিজে পার্টির নামে মদ্যপান করে পরিবেশ নষ্ট করে তাহলে এটি আমাদের ও আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই গুলশান বনানী ও উত্তরা এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক আমাদের কাছে এ ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে যোগাযোগ করেন।
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন তো আমাদেরই সহযোগী-সহকর্মী। আমাদের উদ্দেশ্য মহৎ, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করি। তারা তাদের কাজটি করবে, আমরা আমাদের কাজটি করব। তবে উত্তরার অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তাকে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করার কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। আমাদের টিম রাত ৯ টা থেকে ২টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেছে। যেখানে যেখানে মদ পাওয়া গেছে সেখানে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
উত্তরার অভিযানের বিষয়ে ডিএনসিকে ডিবি জানিয়েছে কিনা বা তাদের সহযোগিতা চেয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা যখন প্রয়োজন মনে করি তখন অনেককে বলি অভিযান পরিচালনা করার কথা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে কারা অভিযান পরিচালনা করবে, আর কারা করতে পারবে না। যেখানে অসামাজিক কার্যকলাপ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হবে সেখানে পুলিশ অভিযান চালাতে পারবে সেটা বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায়।
রোববার আমাদের কাছে গুলশান সোসাইটি অভিযোগ করেছে ইউনাইটেড হাসপাতালের সামনে সারা রাত মদ বিক্রি হয়। উত্তরার সংসদ সদস্য আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, ডিজে পার্টির নামে সেখানে সারা রাত নাচানাচি হয়। আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। এক ব্যক্তি ৫টি লাইসেন্স নিয়ে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করে নৈরাজ্যে সৃষ্টি করছিল বলে আমরা যেমন অভিযান পরিচালনা করেছি, তেমনি প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন মাদকের বিরুদ্ধে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা তথ্য পেলে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব। অন্য কোনো সংস্থা যদি কাজটি নাও করে আমরা করব।
রাজধানীতে অনেক বারে ডিজে পার্টি হয়। কিন্তু ডিজে পার্টির কোনো বৈধতা নেই। কোন কোন বারে ডিজে পার্টি হয় এমন তালিকা ডিবির কাছে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় কোথায় অবৈধ ডিজে পার্টি ও মদ বিক্রি হয় তথ্য পেলে আমরা অবশ্যই সেখানে অভিযান পরিচালনা করব।
সূত্র: বাংলানিউজ
এম ইউ/১০ অক্টোবর ২০২২