লাশ কাটা ঘরে বেঁচে উঠেও মৃত্যু
ক্যানবেরা, ৮ অক্টোবর – ৫৫ বছর বয়সী এক অস্ট্রেলিয়ান ব্যক্তিকে মৃত ভেবে লাশ কাটা ঘরে পাঠিয়ে দেন এক নার্স। জ্ঞান ফিরতেই লাশ কাটা ঘরে নিজেকে পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্কে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার এমনই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার রকিংহাম হাসপাতালে।
কেভিন রিড (৫৫) নামের এক রোগীকে হাসপাতালের পেলিয়েটিভ কেয়ারে রাখা হয়। নার্স এসে তাকে পরীক্ষা করার পর মৃত ঘোষণা করেন। সাধারণত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণার দায়িত্ব পালন করে থাকলেও এ ক্ষেত্রে সে ভূমিকায় ছিলেন এক নার্স। আর তাতেই বিপত্তি ঘটে।
রিডকে মৃত ঘোষণা করার পর লাশ কাটা ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন যখন চিকিৎসক আবারও রিডের মরদেহ পরীক্ষা করেন তখন তিনি দাবি করেন, এই ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হলেও সে সময় তার মৃত্যু হয়নি। বরং লাশ কাটা ঘরেই আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে রিডের। চিকিৎসকের এই দাবি ঘিরেই শোরগোল পড়ে গেছে।
বিজনেস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালের কর্মীরা ডাক্তারকে বলেছিলেন রিডের দেহটি মর্গে গাউন পরিয়ে বিশ্রামের অবস্থানে রাখা হয়েছে এবং তার চোখ বন্ধ ছিল। কিন্তু ডাক্তার গাউনে রক্ত দেখতে পেয়েছেন। কর্মীরা যেভাবে বর্ণনা করেছিলেন মরদেহটি সেভাবে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া লাশের ব্যাগ এবং চোখ খোলা ছিল।
ওই চিকিৎসক হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন এবং হাসপাতাল এখন ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।
ওই চিকিৎসক আদালতকে বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি রক্তগুলো তাজা ছিল। এ ছাড়া মরদেহের হাতের অবস্থান এবং চোখের চিহ্নগুলো মর্গে পৌঁছনোর পর ময়নাতদন্তকারী ব্যক্তির দেওয়া তথ্যের সাথে মেলেনি। ’
আদালতের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘রকিংহাম হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যুর বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর আদালত মৃত্যুর ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেন। তবে আদালত তদন্তের তথ্য প্রকাশ করেন না। ’
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে রিডের পরিবার। তাদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রিডের মৃত্যুর যে সনদ দিয়েছে সেখানে তারিখ ভুল রয়েছে। সনদে রিডের মৃত্যুর তারিখ দেওয়া হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু পরিবারের দাবি, ওই দিন তারা হাসপাতালে রিডের সঙ্গেই ছিলেন। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই দাবি করা হয়েছে।
অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তখনই রিডের মৃত্যু হয়েছিল। আর তা পরীক্ষা করার পরই নার্স ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করেছেন। শুধু তা-ই নয়, রিডের বেঁচে থাকার কোনো লক্ষণই ছিল না বলে পাল্টা দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রিডকে ব্যাগে রাখার সময় তার জীবিত থাকার কথা অস্বীকার করেছে অস্ট্রেলিয়ার সাউথ মেট্রোপলিটন হেলথ সার্ভিস। সেই সঙ্গে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণের জন্য একটি ভিন্ন সম্ভাব্য ব্যাখ্যাও দিয়েছে।
সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ৮ অক্টোবর ২০২২