চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে চলছে জশনে জুলুসের প্রস্তুতি, ব্যাপক জনসমাগমের আশা

নাসির উদ্দিন রকি

চট্টগ্রাম, ০৭ অক্টোবর – পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আগামী ৯ অক্টোবর। এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি বছরের মতো এবারও জশনে জুলুসের আয়োজন করা হয়েছে। এটি জুলুসের ৫০তম আয়োজন। এবারের জুলুসে ৫০ লাখ মানুষের সমাগমের আশা করছেন আয়োজকরা।

আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, আনজুমান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ৯ অক্টোবর সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ-এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে এ জুলুস শুরু হবে। জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্। আরও অংশ নেবেন আল্লামা পরী সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ ও আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।

আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, জুলুস শুরুর পর বিবির হাট থেকে মুরাদপুর হয়ে মির্জারপুল, কাতালগঞ্জ হয়ে অলিখাঁ মসজিদ চকবাজার, কেয়ারি মোড়, প্যারেড ময়দানের পশ্চিম পাশ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারি (ডানে মোড়), খাস্তগীর স্কুল (ডানে মোড়), শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ রোড হয়ে আসকার দিঘী, কাজীর দেউরী (বামে মোড়), আলমাস (বামে মোড়), ওয়াসা (ডানে মোড়), জিইসি, দুই নম্বর গেইট হয়ে পুনরায় মুরাদপুর (ডানে মোড়) গিয়ে বিবিরহাট জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে দুপুর ১২টায় মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। একই ময়দানে জোহরের নামাজ এবং নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, ‘১৯৭৪ সালে (১৩৯৫ হিজরি) থেকে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (র.) নির্দেশনা ও রূপরেখা অনুসারে দেশে সর্বপ্রথম জশনে জুলুস আত্মপ্রকাশ করে। সর্বপ্রথম জুলুস চট্টগ্রামের কোরবানিগঞ্জ বলুয়ারদীঘি পাড়ের খানকাহ এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হয়। আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় দেশের প্রথম জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন আনজুমান ট্রাস্টের তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ নূর মোহাম্মদ আল কাদেরী। আর ১৯৭৬ সালে তৈয়্যব শাহ (র.) পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ সফরে আসেন। এরপর তিনি নিজেই জুলুসে নেতৃত্ব দেন, যা ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তিনি প্রতিবছর ৯ রবিউল আউয়াল ঢাকা এবং ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে আয়োজিত জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এবার জুলুসে অন্যান্য বছরের তুলনায় লোক সমাগম বেশি হবে। কারণ এ জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্। তাকে দেখতে ভক্তরা আসবেন। জুলুসের শৃঙ্খলায় পাঁচ-ছয় হাজার আঞ্জুমান সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যরা কাজ করবেন। সেই সঙ্গে আছেন গাউসিয়া কমিটির অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক। জুলুসকে ঘিরে চট্টগ্রাম মহানগরী ছাড়াও প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুতি চলছে।’

এ প্রসঙ্গে আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জুলুসকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি চলছে। জুলুস যাতে সুন্দরভাবে হয় এ জন্য আমাদের সব কর্মী দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। এ উপলক্ষে নগর জুড়ে সাজ-সজ্জার কাজ চলছে। গেল বছর ৩৫-৪০ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল জুলুসে। এবার আরও বেশি মানুষের সমাগম হবে। এবার জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্। অংশ নেবেন আল্লামা পরী সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ ও আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ। তিন হুজুরের কারণে এবার জুলুসে অন্তত অর্ধকোটি মানুষের অংশ গ্রহণ হবে বলে আশা করছি। আগত মানুষের শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবে নিজস্ব সিকিউরিটি ফোর্স।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আইএ/ ০৭ অক্টোবর ২০২২

Back to top button