বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে পাইপলাইন চায় জার্মানি-স্পেন, বাধা ফ্রান্স
রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় মরিয়া হয়ে জ্বালানির নতুন উৎস খুঁজছে জার্মানি। চলমান সংকট কাটানোর লক্ষ্যে নতুন একটি পাইপলাইন নির্মাণের বিষয়ে আলোচনার জন্য বর্তমানে স্পেনে রয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে তার সঙ্গে একমত স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পোদ্রো সানচেজও। কিন্তু এ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফ্রান্স। খবর ডয়েচে ভেলের।
প্রস্তাবিত পাইপলাইনটি যাবে পিরানিস পর্বতমালার পাশ দিয়ে। স্পেন থেকে ফ্রান্স হয়ে তা জার্মানিতে পৌঁছাবে। ইউরোপের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকট মেটাতে এই পাইপলাইন খুবই জরুরি বলে মনে করছেন জার্মানি ও স্পেনের শীর্ষ নেতারা।
সফররত শলৎস ও সানচেজের মধ্যে আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে এই পাইপলাইন। দুই নেতাই এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পক্ষে।
জয়েন্ট অ্যাকশন প্ল্যানে বলা হয়েছে, হাইড্রোকার্বন রেডি গ্যাস পাইপলাইন তৈরি করা জরুরি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি জ্বালানি বাজার তৈরি করতে গেলে এই পাইপলাইন খুবই দরকার। পিরানিসের পাশ দিয়ে যাওয়া পাইপলাইনটি ২০২৫ সালের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। এর ফলে ইইউ’র কৌশলগত সার্বভৌমত্ব রক্ষা পাবে এবং সবুজ জ্বালানি পাওয়া যাবে।
জার্মানি এই পাইপলাইন তৈরির বিষয়ে বেশি আগ্রহী। জার্মানরা এতদিন সবচেয়ে বেশি গ্যাস পেতো রাশিয়ার কাছ থেকে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। অসংখ্য নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা রাশিয়ার গ্যাসের ওপর আর নির্ভর করতে পারছে না জার্মানি।
এ অবস্থায় মাদ্রিদ ও বার্লিন চায়, নতুন একটি পাইপলাইন তৈরি হোক, যা যাবে ফ্রান্সের মধ্য দিয়ে।
স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পাইপলাইনের অভাবে স্পেন প্রাকৃতিক গ্যাসের শতভাগ ব্যবহার করতে পারছে না এবং ইউরোপের বাকি দেশগুলোকেও পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ দিতে পারছে না।
তবে এই পাইপলাইনের বিষয়ে মোটেও আগ্রহী নয় ফ্রান্স। প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল ২০১৩ সালে। কিন্তু ২০১৯ সালে তা বাতিল করা হয়। কারণ দুটি- পরিবেশবিদদের আশঙ্কা এবং আর্থিক দিক থেকে লাভজনক না হওয়া।
গত মাসেও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ এই পাইপলাইন নির্মাণের বিরোধিতার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পিরানিস দিয়ে এরই মধ্যে দুটি পাইপলাইন গেছে। সেগুলোরই পুরোপুরি ব্যবহার করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় তৃতীয় পাইপলাইনের কোনো প্রয়োজন নেই।
অবশ্য স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর শলৎস বলেছেন, তিনি মনে করেন, ফ্রান্স এই পাইপলাইন প্রকল্প পুরোপুরি বাতিল করেনি। কিছু প্রকল্প আজ লাভজনক না লাগলেও কাল তা লাভজনক হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জার্মানি ও স্পেন এই পাইপলাইন আরও প্রসারিত করতে চায়। এর ফলে ইউরোপের অনেক দেশই উপকৃত হবে বলে দাবি তাদের।
জার্মান চ্যান্সেলর জানিয়েছেন, জার্মানি নিজস্ব একটি এলএনজি টার্মিনাল বানাচ্ছে। এটি পরে হাইড্রোজেনের জন্যেও ব্যবহার করা যাবে।
আইএ/ ০৬ অক্টোবর ২০২২