ইসলাম

‘আমি জান্নাতে আপনার সঙ্গে থাকতে চাই’

নবিজির সাহাবি। হজরত রাবিআ ইবনে কাব আল আসলামি। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে তাঁর সহজ সরল চাওয়া। হে প্রিয় নবি! আমি চাই যে, আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে দিন, যাতে তিনি আমাকে জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি দেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করান। মুসনাদে আহমাদে এসেছে, তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জান্নাতে আপনার সঙ্গে থাকতে চাই।’ কিন্তু কীভাবে! নবিজি কী বলেছিলেন?

কে এই রাবিআ?
আহলুস সুফফার অন্যতম সদস্য ছিলেন হজরত রাবিআ ইবনে কাব আল আসলামি রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি মসজিদে নববিতে থাকতেন। দিনের বেলায় নবিজির খেদমত করতেন আর রাতের বেলায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘরের চৌকাঠে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তেন। যাতে রাতের বেলায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো প্রয়োজনে ডাকলে দ্রুত সাড়া দিতে পারেন।

নবিজির বিশেষ গুণ
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ একটি গুণ ছিল এই যে, কোনো সাহাবি তার খেদমত করলে তাকে তিনি প্রতিদান দিতে চাইতেন। এ চিন্তা থেকে নবিজি হজরত রাবিআকে বললেন, হে রাবিআ! আমার কাছে কিছু চাও, আমি তোমাকে দেবো।

সাহাবি রাবিআর বিচক্ষণতা ও চাওয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে কোনো প্রতিদান পাওয়া অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়। সে কারণে সাহাবি হজরত রাবিআ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাড়াহুড়ো না করে চিন্তা-ভাবনার জন্য সময় নিলেন। তিনি অনেক ভাবনা-চিন্তা করে দেখলেন, দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী ও ধ্বংসশীল। তাই এমন কিছু চাইতে হবে; যা চিরস্থায়ী জীবন পরকালে কাজে লাগে।
হজরত রাবিআর সরল চাওয়া, হে আল্লাহর রাসুল! আমি চাই যে, আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে দিন, যাতে তিনি আমাকে জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি দেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করান। মুসনাদে আহমাদের বর্ণনায় এসেছে, রাবিআ বলেছিলেন, ‘আমি জান্নাতে আপনার সঙ্গে থাকতে চাই।’

নবিজির দোয়া ও উপদেশ
হজরত রাবিআর চাওয়া শুনে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। এরপর বললেন, এ জিনিস চাওয়ার কথা তোমাকে শিখিয়ে দিয়েছে কে? তিনি বললেন, এটি আমাকে কেউ শিখিয়ে দেয়নি, তবে আমি চিন্তা করে দেখলাম যে, দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী ও ধ্বংসশীল। আর আল্লাহর কাছে আপনার রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। তাই আমি এটিই ভালো মনে করলাম যে, আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে দেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি দোয়া করবো, কিন্তু তুমি (আল্লাহকে) বেশি বেশি সেজদা করার মাধ্যমে তোমার এ আশা পূরণের জন্য আমাকে সাহায্য করো।’ (তাবারানি, আত-তারগিব, মুসনাদে আহমাদ)

সাহাবি হজরত রাবিআ ইবনে কাব আল আসলামি রাদিয়াল্লাহু আনহুর প্রতি নবিজির উপদেশ ছিল, আল্লাহকে বেশি বেশি সেজদা করা। কারণ বেশি বেশি সেজদা করলেই মহান আল্লাহ বান্দাকে অতি আপন করে নেবেন। দান করবেন চিরস্থায়ী শান্তির স্থান জান্নাত।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে জান্নাতের মেহমান হওয়ার জন্য বেশি বেশি সেজদা দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আইএ

Back to top button