পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন

পঞ্চগড়, ২৫ সেপ্টেম্বর – পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপংকর রায়কে প্রধান করে কমিটি গঠন হয়। জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যেপ্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এরআগে, দুপুরে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনায় শিশু, নারীসহ ২৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়। এরমধ্যে ১২ নারী, আট শিশু ও চার পুরুষের লাশ রয়েছে। এ ঘটনায় ৩০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।

এদিকে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘মহালয়া উপলক্ষে মাড়েয়া বাজার এলাকার আউলিয়া ঘাট থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে ৮০ জনের বেশি যাত্রী বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরে (নদীর অপরপাড়ে) যাচ্ছিলেন। তবে মাঝনদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় কয়েকজন সাঁতরে তীরে ওঠেন। ঘটনাস্থলেই ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ১০ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর সাত জনের মৃত্যু হয়। এখনও ৩০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় নৌকার মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, মহালয়া উপলক্ষে মানুষের চাপ বেশি ছিল। প্রায় সব নৌকা বেশি করে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনাকবলিত নৌকায় যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল ৩৫ থেকে ৪০ জন। সেখানে ৮০ জনের বেশি যাত্রী নেওয়া হয়েছিল। অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।’

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোলেমান আলী বলেন, ‘নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১২ নারী, আট শিশু ও চার পুরুষের লাশ পেয়েছি আমরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এখানে এ পর্যন্ত ১৬ জন নিখোঁজের তালিকা করা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। সবার তালিকা পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে প্রকৃতপক্ষে কতজন নিখোঁজ রয়েছেন। লাশ শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘নৌকাটিতে দ্বিগুণ যাত্রী ছিল। তবে ফায়ার সার্ভিসের অভিযান শেষ না হলে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা জানানো যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত ২৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদের পরিবারকে ২০ হাজার করে এবং আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আইএ/ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

Back to top button