জাতীয়

দলিল ছাড়া কেবল দখল করে জমির মালিকানা নয়: ভূমিমন্ত্রী

ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর – ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা প্রকাশ করেন আগামী বছরের (২০২৩ সালের) জানুয়ারি মাস থেকে ই-নামজারি ব্যবস্থার মত সারা দেশে ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থাতেও শতভাগ ডিজিটাল অর্থাৎ এন্ড-টু-এন্ড ডিজিটাল সার্ভিস বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

এক সাক্ষাৎকারে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সাক্ষাতকারটি বুধবার গণমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হয়।

প্রসঙ্গত, নামজারি সিস্টেমে আবেদন, ফি প্রদান এবং আবেদন মঞ্জুর শেষে প্রয়োজনীয় দলিলাদি যেমন ডিসিআর ও খতিয়ান সংগ্রহ প্রক্রিয়া সবকিছুই এখন ডিজিটাল। এ ছাড়া আগামী পহেলা অক্টোবর ২০২২ থেকে ই-নামজারি ব্যবস্থায় ম্যানুয়ালি/নগদ টাকায় কোনও ফি জমা নেওয়া হবে না।

অবৈধ ভূমি দখল সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী জানান, ‘দলিলাদি যার, জমি তার’ এই ভাবনা থেকেই ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ এর খসড়া তৈরির কাজ করছে ভূমি মন্ত্রণালয় (দলিলাদি বলতে যথাযথ নিবন্ধন দলিল, খতিয়ানসহ আনুষঙ্গিক নথিপত্র)।

তিনি বলেন, এই আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে পরীক্ষণের জন্য; এরপর আইন প্রণয়নের জন্য সংসদে পাঠানো হবে। কেউ যত বছরই জোর করে কোনও জমি দখল করে রাখুক না কেন, যথাযথ দলিলাদি ছাড়া বেআইনি দখলদারের মালিকানা এই আইনে কখনওই তা স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। যথাযথ দলিলাদি ব্যতীত কেবল দখল করে জমির মালিকানা এই যুগে অবিচার বলেও মন্তব্য করেন ভূমিমন্ত্রী। আইন প্রণয়নের পর জমি দখল সংক্রান্ত হয়রানি উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

জরিপ কার্যক্রম যথাযথ না হওয়ার কারণে বেশিরভাগ মামলা-মোকদ্দমা হয় উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, এজন্য বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ (বিডিএস) প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ড্রোনসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিডিএস পাইলট হিসেবে পটুয়াখালী ও বরগুনায় শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু পরীক্ষামূলক ফলাফল হাতে এসেছে যা প্রায় ৯৯ শতাংশ নির্ভুল। এটা পর্যালোচনা শেষে প্রয়োজনীয় কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করে সারা দেশে একযোগে শিগগিরই বিডিএস শুরু করা হবে। বিডিএস শেষ হলে মামলা-মোকদ্দমা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে বলে ভূমিমন্ত্রী মনে করেন। প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে একযোগে বিডিএস উদ্বোধন করবেন বলে এই সময় মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

জাতীয় জীবনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাজের গুরুত্ব ও এর কর্মপরিধির ব্যাপকতা বোঝাতে ভূমিমন্ত্রী এসময় বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় অনেক বড় মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের মানচিত্র যত বড়, ভূমি মন্ত্রণালয় তত বড়। এখানে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে।

যেহেতু সারাদেশ থেকে ভূমি অফিস সম্পর্কে অভিযোগ আসে সেহেতু মন্ত্রী হিসেবে সারাদেশে সারপ্রাইজ ভিজিট করা অত্যন্ত জটিল উল্লেখ করে সাক্ষাতকারে ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, ভূমি প্রশাসনে সিস্টেম উন্নয়ন করে গুণগত পরিবর্তন আনাই সর্বোত্তম।

‘আমি চিন্তা করলাম আরও গুণগত পরিবর্তন করতে হবে আমাদের; এখানে সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে। সিস্টেমকে যদি আমরা ডেভেলপ করে নিতে পারি, আমার কারও সাথে কারও কথা বলার প্রয়োজন নেই। সিস্টেম সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে এবং সিস্টেমের মাধ্যমে মানুষ সেবা পেতে থাকবেন’– মন্ত্রী এ কথা বলেন।

‘মানুষকে কষ্ট দেবেন না। আপনার আউট অফ দ্য বক্স চিন্তা করতে হবে। মানসিকতা বদলাতে, আপনার কর্তব্য সচেতন হতে হবে। মানুষকে কীভাবে সেবা দেওয়া যায় সেটা আপনার চিন্তা-ভাবনায় থাকতে হবে’- সরকারি ভূমি সেবা প্রদানকারী গণকর্মচারীদের কাছে ভূমিমন্ত্রীর আশা। মন্ত্রী আরও বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্তে তিনি গঠনমূলক বিতর্ককে উৎসাহ দেন।

সূত্র: রাইজিংবিডি.কম
আইএ/ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

Back to top button