জাতীয়

শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও রেশনিং চালু যৌক্তিক দাবি : মেনন

ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর – বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, শ্রমিকদের দাবিগুলো পুরনো। করোনার শুরু থেকে শ্রমিকরা এক অনিশ্চিত জীবনযাপন করছে। তাদের মালিকরা একবার কাজে এনেছেন আবার বাড়িতে পাঠিয়েছেন। এখন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও রেশনিং চালু করা উচিত।

শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে জাতীয় গামেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ১৬তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, এরই মধ্যে গার্মেন্টস আমদানিকারক দেশগুলো অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমদানি কমিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে ৩০ শতাংশ। পণ্যমূল্য না পাওয়ার কথা বলে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ন্যায্য শ্রম না দেওয়ার পায়তারা করছে মালিকরা। বিদেশি রপ্তানির অজুহাতে শ্রমিকদের মজুরি না বাড়ানো অন্যায়।

‘২০১৮ সালে মজুরি বৃদ্ধির পর বলা হয়েছিল তিন বছর পর মজুরি বাড়ানো হবে। এখন সময় এসেছে মজুরি বৃদ্ধি করার। তাই শ্রমিকদের পাশাপাশি জাতীয় নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করা এসময়ে গুরুত্বপূর্ণ। জিনিসপত্রের যে দাম তাতে রেশন ছাড়া ফ্যামিলি কার্ড দিয়ে চলা সম্ভব নয়। ফ্যামিলি কার্ড গার্মেন্টস শ্রমিকরা পায়না। শ্রমিকরা কাজের জন্য ওএমএস (খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী) কার্ড গ্রহণ করতে পারে না। শুধু বিবেচনা নয়, রেশন ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি চালু করতে হবে। রেশনের দুর্নীতির কথা বলে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা অযৌক্তিক।’

তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীরা মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস পেলে গার্মেন্টস শ্রমিকরা কেন এ ছুটি পাবেনা। এ ছুটি না দিয়ে গার্মেন্টেসের নারী শ্রমিকদের অধিকার থেকে বঞ্ছিত করা হচ্ছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলো আরও শক্তিশালী হতে হবে তাদের দাবি আদায়ে। নেতাদেরকে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করতে হবে।

এর আগে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো-

> শ্রমের ন্যার্য মজুরি চাই-গার্মেন্টস পণ্যর ন্যায্য মূল্য চাই ।
> শ্রম ও শিল্প বান্ধব শ্রম আইন চাই ।
> অবিলম্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি এবং মজুরি বোর্ড চাই ।
> নতুন মজুরি ঘোষণার আগে ৫০% মহার্ঘ ভাতা চাই। জীবন-যাপন উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।
> নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত কর।
> ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সব বাধা অপসারণ কর।
> সংগঠিত হওয়া, দর কষাকষি করা ও ধর্মঘট করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
> আইএলও কনভেনশন ১০২ ও ১৯০ অনুস্বাক্ষর করা।
> আইএলও কনভেনশন ১১১ এবং ১৪৯ বাস্তবায়ন করতে হবে।
> গার্মেন্টসসহ সব বেসরকারি সেক্টরে সরকারি সেক্টরের মতো মের্টার্নিটি ছুটি ছয় মাস কার্যকর করতে হবে।
> গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

জাতীয় গামেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন নাহার, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জোবায়দা পারভীন, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সমন্বয়ক চৌধুরী আশিকুল আলম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল আলম রাজু, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফা আক্তারসহ সংগঠনটির নেতারা।

সূত্র: জাগোনিউজ
আইএ/ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

Back to top button