ঢাকা

নাকে অ্যাসিড ঢেলে চিকিৎসা!

ইউসুফ সোহেল

ঢাকা, ০৯ অক্টোবর- ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে চা-পানের ব্যবসা করছেন রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বর সুজাতনগর এলাকায়। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন দোকানের পাশেই একটি বাসায়। বেশ কিছুদিন ধরে নাকের সমস্যায় ভুগছিলেন তার স্ত্রী তাহমিনা বেগম। মিরপুর ১০ নম্বর আলোক হেলথ কেয়ার হাসপাতালের ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) রণজিত কুমার মিস্ত্রীর অধীনে ছিলেন চিকিৎসাধীন। সেরেও উঠছিলেন। কিন্তু সব কিছু তার ওলোট-পালোট হয়ে যায় করোনাকালীন লকডাউনে। আটকে পড়েন গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনায়। স্মরণাপন্ন হন স্থানীয় বেতাগী বাজারের একটি চিকিৎসালয়ে। ৪ হাজার টাকা চুক্তিতে গৃহবধূ তাহমিনার নাকের রোগ পুরোপুরি ভালো করে দেবেন বলে জানান চিকিৎসক ডা. নুরুল হক। কিন্তু বিধিবাম। ওই চিকিৎসকের কাছে নাকের রোগ সারাতে গিয়ে এখন প্রাণশঙ্কায় পড়েছেন তিন সন্তানের ওই জননী।

অভিযোগ, চুক্তি অনুযায়ী চিরতরে তাহমিনার রোগ সারাতে গিয়ে ডা. নুরুল হক তার নাকে অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছেন। তেজক্রিয়তায় তার নাকের হাড় ও মাংস জোড়া লেগে গেছে। বিষয়টি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডা. রণজিত কুমার। এখন প্রতিনিয়ত নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে তাহমিনার, নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। অগত্যা গত ৪ অক্টোবর ডা. নুরুল হকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে এর প্রতিকার চেয়ে স্বাস্থ্য অধিপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) দপ্তরে অভিযোগ জানান চা দোকানি জাকির হোসেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, নাকের সমস্যাজনিত কারণে গত ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডা. রণজিত কুমার মিস্ত্রীর অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন তার স্ত্রী। করোনা পরিস্থিতির আগে সপরিবারে গ্রামে চলে যান। লকডাউনের কারণে গ্রামে আটকে পড়েন তারা। এদিকে স্ত্রীর নাকের সমস্যা বাড়তে থাকে, শেষ হয়ে যায় ঢাকা থেকে নেওয়া ওষুধ।

উপায় না পেয়ে ডা. নুরুল হকের কাছে স্ত্রী তাহমিনা বেগমকে নিয়ে যান জাকির। সমস্যা দেখে-শুনে ৪ হাজার টাকা চুক্তিতে চিরতরে রোগ সারানোর চিকিৎসায় হাত দেন ওই চিকিৎসক। ১০ দিন পর পর এক মাস তাহমিনা বেগমকে চিকিৎসা করানোর পর কোনো পরিবর্তন তো হয়ইনি, বরং আগের চেয়ে অবনতির দিকে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে ডা. নুরুল হক রোগীকে ঢাকায় নিয়ে অপরেশন করানোর পরামর্শ দেন। পরে ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) রণজিত কুমার সার্বিক পরিস্থিতি

দেখে-শুনে বলেন- অ্যাসিড প্রয়োগের কারণে তাহমিনার নাকের হাড় ও চামড়া জোড়া লেগে গেছে। ভুল চিকিৎসার কারণেই রোগীর সমস্যা বেড়েছে আগের চেয়ে। আর যেন কোনো রোগীর সর্বনাশ না হয়, এই লক্ষ্যে ডা. নুরুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যের ডিজির কাছে আবেদন জানান জাকির হোসেন। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে ডা. নুরুল হক এ প্রতিবেদককে জানান, তাহমিনা বেগম নামে কোনো রোগীর নাকের চিকিৎসাই করেননি তিনি।

সূত্র: আমাদের সময়

আর/০৮:১৪/০৯ অক্টোবর

Back to top button