বীরনিবাসে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে অবস্থান কর্মসূচি মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের
নরসিংদী, ১৩ সেপ্টেম্বর – নরসিংদীর মনোহরদীতে ‘বীর নিবাস’ প্রকল্পের ঘরে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এই অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে গত ৩০ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত মোহাম্মদ উল্লাহ মোল্লার স্ত্রী রুবি বেগম। অভিযোগের ১২ দিন পরও প্রতিকার না পেয়ে গতকাল সোমবার উপজেলা পরিষদের সামনে ফেস্টুন নিয়ে বসে প্রতিবাদ জানান তাঁদের সন্তান সাকিব মোল্লা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে বীর নিবাস পরিদর্শনে যান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
লিখিত অভিযোগ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সাকিব মোল্লার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বাসুলী কান্দি গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ উল্লাহ মোল্লার স্ত্রী রুবি বেগম মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস প্রকল্পের একটি ঘর বরাদ্দ পান। গত শনিবার থেকে এই ঘরের নির্মাণকাজ শুরু করেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সুমন বর্মণ।
সরকারি চুক্তি অনুযায়ী, মানসম্পন্ন নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কথা থাকলেও ঘর নির্মাণে তা মানা হচ্ছিল না। নিম্নমানের ইট, বালু ব্যবহারের কারণে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, এই সামগ্রী দিয়েই কাজ চলবে। এ সময় নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য থাকার ঘর ও টয়লেটের ব্যবস্থা করে দেওয়ারও শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে আধাকিলোমিটার দূরত্বের সড়ক থেকে ইট, বালুসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী বহন করার শর্ত দেওয়া হয়। তবে নানার বাড়িতে বসবাসকারী দরিদ্র ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষে নির্মাণসামগ্রী বহন করার খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ উল্লাহ মোল্লার ছেলে সাকিব মোল্লা বলেন, ‘আমি ঢাকায় লেখাপড়া করি। এলাকায় কোনো ঘরবাড়ি না থাকায় পরিবারের অন্য সদস্যরা আমার নানার বাড়িতে থাকি। নিম্নমানের সামগ্রীর বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করলেও তা দিয়েই কাজ করার কথা জানায় ঠিকাদারের লোকজন। অন্যদিকে নির্মাণসামগ্রী বহনের টাকা দেওয়ার জন্যও আমাদের চাপ দেওয়া হয়। এই অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে আমার মা ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে একাধিকবার মৌখিকভাবে অবগত করা হয়। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমি এখানে অবস্থান করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। ’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম কাসেম বলেন, ‘অনিয়মের সত্যতা পেলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। ’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফখরুদ্দিন রাজি বলেন, ‘সুমন বর্মণ নামের একজন এই বীর নিবাস নির্মাণকাজের ঠিকাদার। অভিযোগ সম্পর্কে জেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’
সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২