ইউরোপ

প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার শীর্ষ পদে নেই শ্বেতাঙ্গ পুরুষ

লন্ডন, ০৮ সেপ্টেম্বর – যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস মঙ্গলবার দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রিসভা গঠন করেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় রয়েছে বেশ কিছু চমক। এই প্রথম দেশটির সরকারের গুরুত্বপূর্ণ চার পদে নেই কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ। নতুন সরকারের প্রধান ট্রাস শ্বেতাঙ্গ হলেও তিনি একজন নারী।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিজ ট্রাসকে নিয়োগ দেওয়ার পরই তিনি ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে উঠেছেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি মন্ত্রিপরিষদ নতুন করে ঢেলে সাজান। এতে আছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ অনেকে। আবার বাদ পড়েছেন প্রভাবশালী অনেকেই।

ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অর্থমন্ত্রী হিসেবে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাস। তাঁর মা-বাবা ৬০ এর দশকে ঘানা থেকে যুক্তরাজ্যে এসে বসবাস শুরু করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জেমস ক্লিভারলি। তাঁর মা সিয়েরা লিওন বংশোদ্ভূত আর বাবা একজন শ্বেতাঙ্গ। মিশ্র বর্ণের শিশু হওয়ায় তাঁকে নিগৃহীত হতে হয়েছিল বলে অতীতে অভিযোগ করেছেন তিনি। কৃষ্ণাঙ্গ ভোট পেতে তাঁর দল কনজারভেটিভ পার্টির আরও বেশি কিছু করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন ক্লিভারলি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সুয়েলা ব্রাভারম্যানকে। ছয় দশক আগে তাঁর মা-বাবা কেনিয়া ও মরিশাস থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমান। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেলের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন মিশেল ডোনেলান। যুক্তরাজ্যের নতুন উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন ট্রাসের কাছের বন্ধু তেরেসে কফে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী থেকে প্রার্থী দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি। এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিসভায়ও ক্রমেই সেই বৈচিত্র্য বাড়ানো হচ্ছে। মাত্র কয়েক দশক আগেও ব্রিটেনের সরকারগুলোর অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। জাতিগত সংখ্যালঘু থেকে মন্ত্রী নিয়োগ দিতে ২০০২ সাল পর্যন্ত সময় লেগেছিল দেশটির।

নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে চাপের মুখে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে শুরুতেই তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জ্বালানির দাম। ট্রাস জানিয়েছেন, পারিবারিক জ্বালানি ব্যয়ের একটি সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তাঁর। ট্রাসের এ কথা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন ব্রিটিশ পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের বক্তব্য, এই ঘোষণা কার্যকর হলে মূল্যস্ম্ফীতির হার তেমন একটা আর বাড়বে না। অর্থাৎ যুক্তরাজ্যের মন্দা অতটা গভীর হবে না।

সূত্র: সমকাল
আইএ/ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

Back to top button