জাতীয়

ট্রানজিটের এক চালানে সরকার পেয়েছে ২৯ হাজার টাকা

মাসুদ মিলাদ

চট্টগ্রাম, ০৮ সেপ্টেম্বর – চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস হওয়া ট্রানজিটের একটি চালান এখন সড়কপথে সিলেটের শ্যাওলা স্থলবন্দর হয়ে ভারতের আসামের পথে রয়েছে। এক কনটেইনারের এ চালানে কাস্টম, বন্দর ও সড়ক বিভাগ পেয়েছে ২৮ হাজার ৯৩৫ টাকা। এর বাইরে বেসরকারি খাতেও আয় হয়েছে। বন্দর, কাস্টম এবং ট্রানজিটের চালান খালাস ও পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত শিপিং এজেন্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিট চুক্তির আওতায় মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে চালানটি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে পৌঁছায় এমভি ট্রান্স সামুদেরা জাহাজ। মঙ্গলবার জাহাজটি জেটিতে ভেড়ার পরই অন্য কনটেইনারের পাশাপাশি ট্রানজিটের কনটেইনার খালাস করা হয়। এরপর ভোরে ভারতের উদ্দেশে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রাইম মুভার ট্রেইলারে করে চালানটি নিয়ে রওনা হন কাস্টমস কর্মকর্তারা। ইলেকট্রনিক সিল অ্যান্ড বিধি কার্যকর না থাকায় কাস্টমস কর্মকর্তারা পাহারা দিয়ে চালানটি নিয়ে যাচ্ছেন।

চালানটি নেওয়ার আগে সরকারি সব মাশুল পরিশোধ করেছে শিপিং এজেন্ট ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। কাস্টম কত ফি পাবে, তা আগেই নির্ধারণ করে দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এতে দেখা যায়, ছয় ধরনের ফি বাবদ কাস্টম পেয়েছে ৭ হাজার ৩০০ টাকা। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কনটেইনারটি জাহাজ থেকে নামানো বাবদ শিপিং এজেন্ট থেকে মাশুল পেয়েছে ৪৩ ডলার বা ৪ হাজার ৮৫ টাকা। এ ছাড়া প্রায় ১ হাজার ৭৫০ টাকা পণ্যের চালানের মালিকের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। শিপিং এজেন্ট থেকে যে মাশুল আদায় হয়েছে, তা সাধারণত পণ্য পরিবহনের ভাড়ার সঙ্গে আগেই আদায় করে নেওয়া হয়।

এর বাইরে সড়ক বিভাগ সড়ক ব্যবহারের মাশুল পেয়েছে ১৫ হাজার ৮০০ টাকা। সব মিলিয়ে ২৮ হাজার ৯৩৫ টাকা পেয়েছে সরকারি তিন সংস্থা। এ হিসাবে ট্রানজিটের চালানে সরকারের টনপ্রতি আয় ১ হাজার ১৫৭ টাকা। কনটেইনারে পণ্য কমবেশি হলে টনপ্রতি মাশুলও কিছুটা কমবেশি হবে।

জানতে চাইলে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, এই কনটেইনার চালানের আমদানিকারক ও শিপিং এজেন্ট—এই দুই খাত থেকে বন্দরের আয় হয়েছে ৫ হাজার ৮৩৫ টাকা। এ টাকা ইতিমধ্যে আদায় হয়েছে।

সরকারি খাতে আয় ছাড়াও পণ্য পরিবহন ও খালাস বাবদ বেসরকারি খাতে আয় হয়েছে। চালানটি কলকাতার বন্দর থেকে বাংলাদেশি জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। ট্রানজিটের চালান পরিবহনকারী মেরিন ট্রাস্ট লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন শেখ সাহিকুল ইসলাম জানান, পণ্য পরিবহনের ভাড়া বাবদ বাংলাদেশি জাহাজমালিকের আয় হয়েছে ৬৫০ ডলার। ডলারপ্রতি ৯৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৬১ হাজার ৭৫০ টাকা।

চালানটি বন্দর থেকে সড়কপথে ভারতে নেওয়ার জন্য ভাড়া করতে হয়েছে প্রাইম মুভার ট্রেইলার। এ ছাড়া শিপিং এজেন্ট ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কমিশন ও ফি রয়েছে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে দেশীয় শিপিং এজেন্ট ম্যাঙ্গো লাইন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইয়াকুব সুজন ভূঁইয়া জানান, ট্রানজিট চালান পরিবহন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা বাবদ আয় হয়েছে আনুমানিক ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। অর্থাৎ কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ভারতে নেওয়া পর্যন্ত চালানটিতে বেসরকারি খাত আয় করেছে প্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। সেই হিসাবে, ট্রানজিটের এক কনটেইনার চালানে সরকারি-বেসরকারি খাতের আয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২ লাখ টাকা।

সূত্র: প্রথম আলো
আইএ/ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

Back to top button