সিলেট, ৬ সেপ্টেম্বর – শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রায় ৯ হাজার। এর বিপরীতে আসন মাত্র আড়াই হাজার। অর্থাৎ ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী আসন পান। অন্যরা বাড়ি বা মেসে থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল পাঁচটি। ছাত্রদের জন্য তিনটি হল। এর মধ্যে শাহপরান হলে ৪৫৬, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৫২৮, সৈয়দ মুজতবা আলী হলে ৪৪০টিসহ মোট এক হাজার ৪২৪ সিট আছে। মেয়েদের হল দুটি। এর মধ্যে প্রথম ছাত্রী হলে ৫৫৯টি, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলে ৫৫০টিসহ মোট ১১০৯টি সিট আছে। সব মিলিয়ে আবাসিক হলে সিট দুই হাজার ৫৩৩টি। এ ছাড়া ছাত্রীদের দুটি হলের অধীনে ক্যাম্পাসের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পাঁচটি ‘ছাত্রী হোস্টেল’ আছে। এর বাইরে অন্য ছাত্রীরা নিজ বাসা কিংবা মেসে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় অনেকাংশে হলবিমুখ শিক্ষার্থীরা। মেয়েদের হলগুলোতে ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রভাব না থাকায় ‘জ্যেষ্ঠতা’র ভিত্তিতে সিট দেয় হল কর্তৃপক্ষ। ফলে তৃতীয় বর্ষে এসে সিট মিললেও প্রথম দুই বছর থাকতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকা ছাত্রী হোস্টেলে। এসব হোস্টেলে থাকতে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয় ছাত্রীদের।
এদিকে হলে আবাসন সুবিধা না পেয়ে অনেকে গাদাগাদি করে থাকছেন বিভিন্ন মেসে। মেসে থাকা-খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ হিসেবে জায়গাভেদে সাত থেকে ১০ হাজার টাকা প্রতি মাসে বহন করতে হয় তাঁদের। শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্য মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। পরিবার থেকে অর্থ নিয়ে এসে লেখাপড়ার খরচ বহন করা তাঁদের জন্য কষ্টসাধ্য। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার বিপরীতে টিউশননির্ভর হয়ে পড়ছেন।
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের আবাসিক ছাত্রী খাদিজা ইসলাম সামিরা বলেন, ‘হলের খাবার খাওয়ার মতো উপযুক্ত না। তবে বেঁচে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে খেতে হয়। ’ তিনি আরো বলেন, হলের রিডিংরুমে পড়ালেখার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। অপরিষ্কার ও পোকামাকড়ে ভরা রিডিংরুম। এ ছাড়া হলে ইন্টারনেট সুবিধাও পর্যাপ্ত নয়। নামমাত্র ইন্টারনেট সুবিধা দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া হলের গণরুম ও ওয়াশরুমের অবস্থা বেশ নাজুক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট জোবায়েদা কনক খান বলেন, হলের খাবারের মান আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে।
অবশ্য দ্রব্যমূল্য বেশি হওয়ায় অনেক সময় খাবারের মান রাখা ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। তবে ছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করছে হল কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মেয়েদের জন্য আরো একটি হল নির্মাণাধীন। হলটি নির্মাণ হয়ে গেলে আরো কিছু ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা হবে। এ ছাড়া ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য ১০ তলা আরো দুটি হল নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। ’
সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২