জাতীয়

সলিমপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক

ঢাকা, ০৪ সেপ্টেম্বর – ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্যসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হবে।

গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিবুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এছাড়া জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গ্রাম রক্ষা বাহিনীর প্রধানগণ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানকে বিশেষ আমন্ত্রণ পেয়েছেন।

প্রায় তিন দশক ধরে জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ে হাজারো অবৈধ স্থাপনা এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠে। সম্প্রতি সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রায় তিন হাজার ১০০ একর খাস জমি।

একসময় জঙ্গল সলিমপুর চট্টগ্রামের এক বিচ্ছিন্ন এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। যেখানে ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীদের দেওয়া পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ ঢুকতে পারতেন না। প্রশাসনের কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্যে তাদের নজরদারি ছিলো। এলাকাটি ছিলো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। সেখানকার অনেক পাহাড় কেটে প্লট হিসেবে বিক্রি করছিল ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীরা। যা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করেছে।

জানা যায়, জঙ্গল সলিমপুরে ভূমিখেকোরা পাহাড় কেটে, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে অবৈধভাবে আবাসস্থল গড়ে তুলেছেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গত কয়েক দিনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জঙ্গল সলিমপুরে বেশ কয়েকটি অভিযানে প্রায় তিন হাজার ১০০ একর খাস জমি উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। এরই মধ্যে ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, আমরা জঙ্গল সলিমপুর এলাকার বেহাত হয়ে যাওয়া প্রায় তিন হাজার ১০০ একর খাস জমি উদ্ধার করেছি। সেসব জমি ভূমিদস্যুরা সাধারণ মানুষের কাছে প্লট হিসেবে দখলস্বত্ব বিক্রয় করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। কয়েকজন কারাগারেও আছেন।

তিনি আরও বলেন, জঙ্গল সলিমপুরের উদ্ধার হওয়া খাস জমির বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। সে কারণেই পাহাড় ও বন রক্ষা করে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য আনার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কীভাবে জঙ্গল সলিমপুর এলাকাটিকে সবুজায়নের মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় সে লক্ষ্যেই আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক হতে যাচ্ছে। এ মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যেমে জঙ্গল সলিমপুর এলাকার অন্ধকার যুগের অবসান ঘটবে।

সূত্র: জাগোনিউজ
আইএ/ ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

Back to top button