পশ্চিমবঙ্গ

সকালে মা বলে ডাকবে ছেলে! ১৮ ঘণ্টা ঘরবন্দি মৃত সন্তান

কলকাতা, ০৩ সেপ্টেম্বর – মৃত শিশুকে ১৮ ঘণ্টা একটি অন্ধকার ঘরে রেখে বাঁচানোর চেষ্টা করার চাঞ্চল্যকর ঘটনা জানা গেল এবার। শেষে মৃত শিশুর দেহে পচন শুরু হলে পিঁপড়া ধরে যায়। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা জেলার রাখসখালি এলাকায়। এ ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

আজকের দিনেও কুসংস্কারের কালো অন্ধকার মানুষের মনে কতটা গভীর বাসা বেঁধে রয়েছে এই ঘটনা তারই প্রমাণ। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে এলাকার প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, মৃত শিশু গৌরব মাইতির বয়স তিন বছর। বৃহস্পতিবাএইদুপুরে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় শিশুটির। দুপুরে মায়ের সঙ্গেই ঘুমিয়েছিল ছোট্ট গৌরব। হঠাৎ মায়ের ঘুম ভাঙতেই দেখেন ছেলে তার কাছে নেই। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু খোঁজ। অনেক খোঁজার পর বাড়ির পাশেই পুকুরে ভাসতে দেখা যায় গৌরবের দেহ। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় মাধবনগর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে তাকে। এরপর গৌরবের মৃতদেহ বাড়িতে যান বাবা গৌরাঙ্গ মাইতি ও মা।

অভিযোগ, তারা ফিসে আসার কিছুক্ষণ পরেই বাড়িতে আসেন এলাকার প্রভাবশালীরা। তারা বলেন গৌরবের মৃত্যু হয়নি। তাদের সন্তান এখনও বেঁচে আছে। এরপরই তারা শিশুটির নিথর দেহ একটি অন্ধকার ঘরের মধ্যে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর রাত ১২টা নাগাদ তারা চলে যান। যাওয়ার সময় বলে যান, ‘কেউ যেন দরজা না খোলে। সকালে ছেলে মা, মা বলে ডেকে উঠবে। ‘ তাদের এই কথায় বিশ্বাস করে বসেন গৌরবের বাবা-মা।

কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই সকালে এরকম ঘটনা ঘটেনি। পরিবারের লোকেরা তখন ঘরের দরখা খুলে দেখে, শিশুর মৃতদেহতে পচন ধরেছে এবং পিঁপড়া আক্রমণ করেছে।

এই খবর পাওয়ার পর আগের দিনের সেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাড়ি ঘেরাও করেন স্থানীয়রা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা।

এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কাকদ্বীপ জোনের সচিব সৌম্যকান্তি জানা বলেছেন, চিকিৎসকরা যেখানে মৃত বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন সেখানে ওই শিশুর কোনোভাবেই বেঁচে ওঠা সম্ভব না। এ ধরনের কুসংস্কারে বিশ্বাস না করে মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সূত্র: কালের কণ্ঠ
এম ইউ/০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

Back to top button