জাতীয়

খালেদা জিয়াকে প্রাপ্য চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার

ঢাকা, ৩১ আগস্ট – সরকার খালেদা জিয়াকে তার প্রাপ্য চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তার যে ন্যূনতম যে চিকিৎসা সেই চিকিৎসা থেকে তিনি বঞ্চিত হচ্ছেন। তার যে চিকিৎসকরা আছেন তারা খুব পরিস্কার করে বলেছেন, বার বার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, বিদেশে একটা বিশেষায়িত হাসপাতালে বা কেন্দ্রে তার চিকিৎসা হওয়া দরকার।

‘কিন্তু দুর্ভাগ্য এদেশের, এই জাতির যে এমন একজন অনির্বাচিত অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বসে আছেন, যার মধ্যে ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার পর্যন্ত নেই। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে গতকাল যে সমস্ত উক্তি করেছেন-আমরা ভাবতেও পারি না, কল্পনাও করতে পারি না যে, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটায় অবৈধভাবেও বসে থাকলেও এভাবে উক্তি কেউ করতে পারে না। এটা সমস্ত রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বিবর্জিত।’

মির্জা ফখরুল বলেন, এর একটাই কারণ- রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। প্রতিমুহুর্তে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তিনি হিংসা করেন এবং তাকে সহ্য করতে পারেন না। যে কারণে আজকে তার সম্পর্কে এই সমস্ত নৈতিক অবলীলায় শিষ্ঠাচার বিবর্জিত এই সমস্ত কথা বলে যা এদেশের মানুষ কখনো ভালো চোখে দেখে না।

জাতীয়তাবাদী যুব দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও যুব দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নার আশু রোগমুক্তি কামনায় নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের নিচতলায় এই মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যেভাবে দৈনন্দিন জিনিসপত্র চাল-ডাল-তেলের দাম বাড়ছে, যেভাবে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, যেভাবে সেখানে ন্যায় বিচার ভুলন্ঠিত হচ্ছে, যেখানে হত্যা-গুম করে দেশের মানুষকে একেবারেই বলা যেতে পারে যে, জিম্মি করে রাখা হয়েছে। সেই সরকার আমাদের দেশের সব অর্জনকে ধবংস করে দিয়েছে। আজকে আমাদের দায়িত্ব দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক হিসেবে, জিয়াউর রহমানের সৈনিক হিসেবে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে এদেরকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, এরা (সরকার) কতো বড় মিথ্যাবাদী। তারা দেশের সন্মানকে ভুলন্ঠিত করছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার তিনি কিছুদিন আগে এখানে এসেছিলেন। তিনি সরকারকে বলেছেন, মন্ত্রিদের বলেছেন, সুশীল সমাজকে বলেছেন, সমগ্র দেশকে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, এই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, এদেশে গুম হয়েছে, এগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন। তিনি এটাও বলেছেন যে, একটা স্বাধীন, সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন যাতে জাতিসংঘ সাহায্য করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরো বলেছেন যে, সেনাবাহিনীর উচিত হবে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যেন তারা কোনো মতে জড়িত না থাকেন।

বিএনপি মহাসবিচ বলেন, অথচ তারা (সরকার) কী বলেছেন? হাইকমিশনার জাতিসংঘে ফিরে যাওয়ার পরে আমাদের এখানে যারা মন্ত্রী আছেন তারা প্রচার করছেন যে, জাতিসংঘের হাইকমিশনার নাকি মানবাধিকার নিয়ে কোনো কথাই বলেননি, এখানে মানবাধিকার পরিস্থিতি খুব ভালো। তিনি নাকি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি।

আজকে সেই হাইকমিশনারের অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে, সরকারের মন্ত্রী সব মিথ্যা কথা বলেছেন এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অবশ্যই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের জন্য সকলকে প্রস্তুতি নেয়ার আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংগঠনের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালামসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/৩১ আগস্ট ২০২২

Back to top button