আইন-আদালত

পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শুরু

ঢাকা, ২৯ আগস্ট – গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়েছে সোমবার। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সোমবার এদিন ঠিক করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, এ মামলায় পি কে হালদারসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তবে শুনানি শেষ না হওয়ায় আদালত অভিযোগ গঠন বিষয়ে নতুন দিন ঠিক করেন।

শুনানির আগে কারাগারে থাকা পি কে হালদারের মামাতো ভাই শঙ্খ ব্যাপারী, ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা ও অবন্তিকা বড়ালকে আদালতে হাজির করা হয়।

এ মামলায় পি কে হালদারসহ ১০ জন পলাতক। পলাতক অন্য আসামিরা হলেন পি কে হালদার, তার মা লীলাবতী হালদার, ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, পি কে হালদারের সহযোগী অমিতাভ অধিকারী, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, রাজীব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি।

এ মামলায় গত জানুয়ারিতে পি কে হালদার, তার মা, ভাই, নিকটাত্মীয়সহ ১৪ জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

২০২০ সালে ৮ জানুয়ারি ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকা অবৈধ উপায়ে অর্জন ও আত্মসাতের পি কে হালদারে বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। একই বছরে ভুয়া পাঁচটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস থেকে ৩৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পিকে হালদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলা হয়।

এছাড়া ২০২১ সালে দশটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভুয়া ঋণপত্র দেখিয়ে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পিকে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে দুদক ১০টি মামলা অনুমোদন করে।

১০ মামলা থেকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ৪৯৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পিকে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা ও ৩০৬ কোটি টাকা আত্মাসাতের অভিযোগে আরও চারটি মামলা রজু করা হয়।

১০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

বিভিন্ন হিসাবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাত ও পাচারের কথা বলা হলেও দুদকের কাছে দেওয়া বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য থেকে জানা যায়, চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পিকে হালদার সরিয়েছেন ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

বিএফইইউর তথ্যমতে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএএস) থেকে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সরান পি কে হালদার চক্র।

গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ১৩ আসামি

পি কে হালদারের অর্থ পাচারের সহযোগী ১৩ জনকে এখন পর্যন্ত দুদক গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন শংখ বেপারি, পি কে হালদারে বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল, নাহিদা রুনাই, পি কে হালাদারের আইনজীবী সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক, ভারপ্রাপ্ত এমডি সৈয়দ আবেদ হাসান, সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরী ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী।

উল্লেখ্য, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেশটির আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সম্নেট ডিরেক্টরেট (ইডি) পিকে হালদার ও তার স্ত্রী ও ভাইসহ মোট ছয়জনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে।

পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

সূত্র: ঢাকা টাইমস
আইএ/ ২৯ আগস্ট ২০২২

Back to top button