মোবাইল হইতে সাবধান! একের পর এক ঘটনায় ভয়ে নেতারা, এই বুঝি সব রেকর্ড হয়ে গেল
কলকাতা, ২৮ আগস্ট – ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে মোবাইল নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জনসভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অনুসারীদের সেলফি তোলার আবদার থাকে। সে আবদার আবার অনেক সময় বিপদও ডেকে আনে। অনেকের সঙ্গে সেলফি তুলে বিপদেও পড়েছেন অনেক নেতা।
এর সাথে যোগ হয়েছে গোপন বৈঠকের ভিডিও ফাঁস হওয়ার আতঙ্ক। এর ফলে বিতর্কিত হচ্ছেন নির্বিবাদী হিসেবে পরিচিত অনেক নেতাও।
আজ রবিবার প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর সঙ্গে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। নিজের বিধানসভার এলাকার শালবনির এক প্রত্যন্ত গ্রামের বৈঠকে বসে কিছুদিন আগে তিনি কিছু বিতর্কিত কথা বলেছিলেন। সেসব কথা তার কোনো অতি উৎসাহী সমর্থক মোবাইলের ক্যামেরায় ধারণও করেছিলেন। আজ সে ভিডিওর মাধ্যমে সেই ঘটনা প্রকাশ পেয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়েছেন শালবনির তিনবারের বিধায়ক। ভিডিও প্রকাশ পাওয়া মাত্রই তাকে শোকজ করেছে তার দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি। শেষে ভুল স্বীকার করে রক্ষা পেয়েছেন তিনি।
কয়েক দিন আগে আরো এক মন্ত্রী তার বক্তব্যের ভিডিও নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন। তিনি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী এবং খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই একটি ঘরোয়া বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এক পুরনো ঘটনার জের ধরে তিনি বলেছেন, ‘কেউ আমাকে চোর বললে তাকে ঘুষি মারব। ’
একসময় ভারতীয় বক্সিং দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন শোভনদেব। ভারতীয় দলের হয়ে শ্রীলঙ্কায় অধিনায়কত্বও করেছেন তিনি। এমনকি দেশের জন্য খেতাবও জিতেছেন। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে কখনোই তাকে কোনো বাজে কথা বলতে শোনা যায়নি। তাই তার মুখ থেকে ঘুষি মারার কথা সহজভাবে নেয়নি সাধারণ মানুষ। তিনিও এই মোবাইল ফোনের জন্যই এ রকম বেকায়দায় পড়েছিলেন।
বিগত বিধানসভা ভোটের সময় কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় বর্ষীয়ান নেতা মুকুল রায় প্রসঙ্গে বিরূপ মন্তব্য করে মোবাইল ক্যামেরায় ধরা পড়ে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। আবার ২০১৯ সালে কৃষ্ণনগরে কর্মীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ভিডিও নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেই ভিডিওটিও করা হয়েছিল মোবাইল ক্যামেরায়।
আবার কংগ্রেস ছেড়ে কেন তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, সেই ব্যাখ্যার ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের বর্তমান তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান।
কমবেশি সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই মোবাইল ক্যামেরার ফাঁদে পড়েছেন। তাই শোনা যাচ্ছে, সব রাজনৈতিক দলের নেতার মনেই এখন মোবাইল নিয়ে আতঙ্ক কাজ করছে।
সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ২৮ আগস্ট ২০২২