ইসলাম

মেহমানদারি করার কিছু আদব

মুফতি মাহমুদ হাসান

মেহমানদারি করার ক্ষেত্রে শরিয়ত কিছু নিয়ম ও আদব শিক্ষা দিয়েছে। যেমন—

এক. মেহমানকে অভ্যর্থনা জানানো। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে মেহমানদের অভ্যর্থনা করার বিবরণ হাদিসে এসেছে। (দেখুন : বুখারি, হাদিস : ৬১৭৬)

দুই. মেহমানের সুখ-শান্তি ও সব ধরনের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করা।

এমনকি মেহমানের সন্তুষ্টির খাতিরে নফল রোজা ভেঙে তার সঙ্গে পানাহারেরও অনুমতি আছে।
তিন. মেহমান আসার সঙ্গে সঙ্গেই কিছু খাবার পেশ করা এবং পরবর্তী সময়ে সাধ্যমতো ভালো আয়োজনের চেষ্টা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও সাহাবায়ে কিরামের আমল দ্বারা তা প্রমাণিত। (দেখুন : মুসলিম, হাদিস : ২০৩৮)

চার. লৌকিকতা পরিহার করে সাদামাটা আয়োজন করা। সালমান ফারসি (রা.)-এর কাছে মেহমান এলে তিনি লৌকিকতামুক্ত মেহমানদারির আয়োজন করে বললেন, ‘যদি রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের মেহমানদের জন্য লৌকিকতা পরিহারের নির্দেশ না দিতেন তাহলে আমি অবশ্যই তোমার জন্য আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন করতাম। ’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৭৩৩)

পাঁচ. মেহমানকে নিজ পরিবার-পরিজনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া। একটি দীর্ঘ হাদিসে এক রাতে সাহাবি আবু তালহা (রা.) ও তাঁর স্ত্রী নিজেরা না খেয়ে এবং সন্তানদের না খাইয়ে মেহমানকে খাওয়ানোর চমৎকার ঘটনায় রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে ভোরবেলা বললেন, আল্লাহ তোমাদের গত রাতের ঘটনায় অধিক খুশি হয়ে আয়াত নাজিল করেছেন : ‘তারা অভাবগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের ওপর অন্যদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আর যাদের অন্তরের কৃপণতা হতে মুক্ত রাখা হয়েছে তারাই সফলতাপ্রাপ্ত। ’ [সুরা : হাশর, আয়াত : ৯] (বুখারি, হাদিস : ৩৭৯৮)

ছয়. সম্ভব হলে নিজ হাতে মেহমানের খেদমতের চেষ্টা করা। কোরআনে কারিমে ইবরাহিম (আ.)-এর নিজ হাতে মেহমানকে খানা পরিবেশনের ঘটনা বিবৃত হয়েছে।

সাত. মেহমানকে শুধু খাবারেই নয়, কথাবার্তা দিয়েও সন্তুষ্ট করতে হয়। সহিহ বুখারিতে বুখারি (রহ.) মেহমানদের সঙ্গে রাতে খোশালাপবিষয়ক পরিচ্ছেদ উল্লেখ করে এর পক্ষে হাদিসও উল্লেখ করেন। (বুখারি ১/২৪)

আইএ

Back to top button