শিক্ষা

কুবিতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস টাইমে বৈষম্য

কুমিল্লা, ২৮ আগস্ট – কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস আসার সময় নিয়ে বৈষম্য দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কর্মচারীরা।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৮৫ তম সভায় শিক্ষা কার্যক্রমের সময়সূচি সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টার পরিবর্তে এক ঘণ্টা এগিয়ে ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু অফিস কার্যক্রম চালুর সময় না এগিয়ে বরং ৯ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা সময় কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।

কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা, রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে একাডেমিক বিভিন্ন বিভাগের অফিস সহকারীদের সকাল ৭টায় আসতে বলা হয়েছে। কর্মচারীদের ওভারটাইম দেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন বক্তব্য জানায়নি প্রশাসন। ফলে কর্মচারীরা পরিবহন না পেয়ে নিজেদের ভাড়ায় অফিসে এসেছেন।

বাংলা বিভাগের অফিস সহকারী কাম ডাটা প্রসেসর মো. জিয়াউর রহমান বলেন, আমাকে সকাল ৭টায় আসতে বলা হয়েছে এবং ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দুই ঘণ্ট ওভারটাইম করতে বলা হয়েছে। দুই ঘণ্টা ওভারটাইম করলে আমি পাব ৭০ টাকা কিন্তু আমার গাড়ি ভাড়া খরচ হয়েছে ১০০ টাকার বেশি। প্রশাসন পরিবহন না দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত কিভাবে নেয়।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওভারটাইমের কথা বললেও মূলত বাড়তি সময়টুকু কর্মচারীদের অফিস টাইম হিসেবে নির্ধারণ করেছে। কারণ একাডেমিক এসকল অফিস সহকারীরা এখন চাইলেই ৯ টায় আসতে পারবে না৷ যেহেতু ক্লাস টাইম ৮ টায় নির্ধারণ করা হয়েছে। কাজেই অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের তুলনায় তারা বৈষম্যের শিকার।

নতুন ক্লাস টাইম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেহেদী হাসান মুন্না নামের গণিত বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ক্লাস ৯টা ১৫ থেকে। যে কারণে ৭টার বাসে শহর থেকে আসা লাগছে যা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এক ঘণ্টা আগানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু যারা শহরে থাকে ওদের ভোগান্তি বেড়েছে।

এদিকে অফিস টাইম কমানো এবং ক্লাস টাইম এগিয়ে আনার বিষয়ে গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আমান মাহবুব বলেন, সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮টা থেকে ৪টা অফিস এটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এখানে যে সমস্যাটা হচ্ছে সেটা হলো শিক্ষকরা আসতেছে ৮টায় আর প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তারা আসতেছে ৯টায়। যেটা গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টা এক দেশে দুই নীতির মতো। তাই আমার মনে হয় এই পদ্ধতিটা রিভার্স করা দরকার।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন এই প্রতিবেদকের উপর চড়াও হন। তিনি বলেন, তোমাদের কি আর কোন প্রশ্ন নেই? সকাল ৯টা থেকে ৪টায় অফিস এটাই কেন বার বার জিজ্ঞেস করতে হবে?

এসময় তিনি পরামর্শ প্রদান করে বলেন, তোমরা আমাকে জিজ্ঞেস করবা ‘স্যার আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও একাডেমিক উন্নতির জন্য কি কি করছেন। স্যার আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য কত টাকার ফান্ড তৈরি করতেছেন। স্যার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বাড়ানোর জন্য কি কি পদক্ষেপ আপনি নিয়েছেন। এসব না জিজ্ঞেস করে তোমরা প্রশ্ন করো ৯টা থেকে ৪টায়। এ ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। আমার সময় নেই।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২৮ আগস্ট ২০২২

Back to top button