পাঙাশ তেলাপিয়া চাষের কইও নাগালের বাইরে
ঢাকা, ২৭ আগস্ট – ইলিশ, রুই-কাতলা কিনতে না পারলেও তুলনামূলক কম দামের পাঙাশ, তেলাপিয়া কিংবা চাষের কই মাছ কিনে আমিষের চাহিদা মেটান স্বল্প আয়ের মানুষেরা। তবে এসব মাছও এখন নাগালে নেই। গত ৮ থেকে ১০ দিনে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে গরিবের এসব মাছের দাম।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হাতিরপুল থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে দেড় কেজি ওজনের একটি পাঙাশ কিনেছেন কামরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘মাসখানেক আগেও পাঙাশ মাছ কিনেছি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। তখন একসঙ্গে কিনতাম চার-পাঁচ কেজি। এখন আর সেই সাধ্য নেই। বাজারে যে জিনিসে হাত দিই সেটার দামই আগুন।’
গতকাল রাজধানীর মগবাজার, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় আকারের প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায় এবং তেলাপিয়া ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। মাসখানেক আগে এসব মাছ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় কেনা যেত। এছাড়া এক-দেড় মাস আগে চাষের কই ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় কেনা গেলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে।
বেড়েছে অন্যান্য মাছের দামও। প্রতি কেজি রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩০০ টাকায়, আকার ভেদে শিং মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বড় কাতলা মাছ ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শোল মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আর মাগুর ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, ছোট আকারের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, মাঝারি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা এবং বড় ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম জানান, পাইকারিতে বাড়ার কারণে খুচরা ব্যবসায়ীরা মাছের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। এতে তাদের বিক্রি কমে গেছে। যেসব ক্রেতা মাছ কিনতে বাজারে আসেন, তাঁদের অনেকেই আগের চেয়ে কম কিনছেন। যিনি আগে পাঁচ কেজি কিনতেন, এখন কিনছেন দুই কেজি।
কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বাড়ার পেছনে কী কারণ রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাছের দাম না বাড়িয়ে উপায় আছে? আমি তো মাছ বিক্রি করে সংসার চালাই। কিন্তু চাল, ডালসহ অন্য জিনিস তো আমারও কিনতে হয়। সেগুলোর দামও বেড়ে গেছে। লাভ না করলে সংসার চইলবো ক্যামনে?’
একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতে এখন হিমশিম খাচ্ছেন নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তরাও। পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে বাজেট কাটছাঁট করছেন তাঁরা। ফলে চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম কিনতে হচ্ছে তাঁদের। এ কারণে মাছের বাজারেও ক্রেতা কমেছে। কমেছে বিক্রিও।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে; এ কারণে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন কারওয়ানবাজারের পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। ফরিদপুর এলাকা থেকে মাছ এনে কারওয়ান বাজারে বিক্রি করেন তিনি। জাকির হোসেন বলেন, পিকআপ ও ট্রাক ভাড়া আগের তুলনায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। ফলে পাইকারি পর্যায়ে গত ১০ থেকে ১৫ দিনে মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে।
সূত্র: সমকাল
আইএ/ ২৭ আগস্ট ২০২২