মানুষের চরিত্রকে পূর্ণতাদানের জন্য মহানবী মুহাম্মদ (সা.) প্রেরিত হয়েছেন। তিনি মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব বিষয়ে ইসলামের রীতি অনুযায়ী তাঁর সাহাবিদের শিখিয়েছেন। একবার মুআজ বিন জাবাল (রা.)-কে রাসুল (সা.) নিম্মোক্ত ১০টি উপদেশ প্রদান করেছিলেন। যা মুসনাদে আহমাদের ২২০৭৪ নম্বর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
এ ১০টি উপদেশ মানবজীবনের আমূল পরিবর্তনের একটি পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনা। যথা—
১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না : শিরক তথা আল্লাহর অংশীদারিত্ব শিকার করা কবিরা গুনাহ। আল্লাহ রোজ হাশরের মাঠে শিরকের গুনাহ কিছুতেই ক্ষমা করবেন না।
২. মাতা-পিতার অবাধ্য হবে না : মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়ার বিষয়ে পবিত্র কোরআনের পাশাপাশি রাসুল (সা.) হাদিস শরিফেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
৩. ফরজ সালাত ত্যাগ করবে না : ফরজ নামাজ ত্যাগ করা ব্যক্তি আল্লাহর রহমত ও নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত হয়।
৪. মদ পান করবে না : মদ পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ নেশা জাতীয় দ্রব্য সব অন্যায়ের চাবিকাঠি।
৫. পাপাচার থেকে বেঁচে থাকবে : অন্যায় কাজ থেকে বেঁচে থাকা মুমিনের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। মানুষ যখন গুনাহের কাজে লিপ্ত হয় তখন আল্লাহর ক্রোধ তার দিকে ত্বরান্বিত হয়।
৬. আল্লাহর পথে লড়াই করা থেকে পিছপা হবে না : আল্লাহর পথে লড়াইয়ে পিছপা হওয়া অপরাধ। যুদ্ধে বের হওয়ার পরে যুদ্ধ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বুঝে পলায়ন করা ইসলামের সঙ্গে গাদ্দারি করার শামিল।
৭. মহামারির স্থান ত্যাগ করবে না : মানুষ যে স্থানে বসবাস করে সেখানে যদি কোনো মহামারি দেখা দেয়, তাহলে সে যেন সেখানেই অবস্থান করে। মৃত্যুর ভয়ে পলায়ন করে সব স্থানে মহামারির বিষ যেন ছড়িয়ে না দেয়।
৮. পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃপণতা করবে না : আল্লাহ প্রিয় বান্দাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবারের জন্য তার অর্জিত সম্পদ থেকে ব্যয় করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। ব্যয়ের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে বলেছেন, কৃপণতা নয়। আর খরচ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে, নিজ পরিবারের সদস্যদের জন্য উত্তম বিষয়ে খরচ করা।
৯. পরিবারকে উত্তম শিষ্টাচার শিক্ষা দেবে : পরিবারের প্রতিটি সদস্যের প্রতি ভালোবাসা ও স্নেহের পাশাপাশি শাসনের একটি প্রভাব পরিবারের কর্তাব্যক্তির থাকা আবশ্যক। কেননা শাসনহীন ভালোবাসা পরিবারকে খুব সহজেই অধঃপতনের দিকে ধাবিত করে। এ ক্ষেত্রে পরিবারের কর্তাব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বড় ভূমিকা পালন করে।
১০. আল্লাহর ভয় প্রদর্শন করবে : সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাতা-পিতার কর্তব্য হচ্ছে সন্তানকে আল্লাহর পরিচয় শেখানো। এবং তাঁর অসীম ক্ষমতা ও তাঁকে ভয় করা সম্পর্কে ছোট থেকেই সন্তানকে অবহিত করা। কারণ আল্লাহর ভয় একজন মানুষকে পরিপূর্ণ মুত্তাকি হতে সাহায্য করে।
আলোচ্য ১০টি উপদেশ হোক আমাদের প্রতিটি মুমিনের জীবন চলার পাথেয়।
আইএ