১০০ কোটি নয়, ‘দিন দ্য ডে’র বাজেট ৪ কোটি টাকা: পরিচালক
ঢাকা, ২৩ আগস্ট – বাংলাদেশ-ইরান যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘দিন- দ্য ডে’ সিনেমাটির বাজেট ১০০ কোটি টাকার বেশি দাবি করেছিলেন অভিনেতা-প্রযোজক অনন্ত জলিল। কিন্তু সিনেমার সহ-প্রযোজক ও ইরানের নির্মাতা মোর্তজা অতাশ জমজম জানিয়েছেন, ‘দিন-দ্য ডে’র প্রকৃত বাজেট পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩০ টাকা।
আজ সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমার চুক্তিপত্র প্রকাশের পর এমন তথ্য জানা গেছে। এদিন ইনস্টাগ্রামে ছয়টি স্লাইডে একটি বিবৃতি দিয়েছেন পরিচালক জমজম। তিনি জানান, চুক্তিপত্রে সিনেমার যে বাজেট ধরা হয়েছে তা ৬টি কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা ছিল অনন্ত জলিলের। এর আগে পরিচালক অভিযোগ করেন, সিনেমাটি নিয়ে চুক্তিপত্রে তারা যে পরিকল্পনা করেছিলেন সেটি মানেননি অনন্ত জলিল। তাই ইরান ও বাংলাদেশের আদালতে অনন্তের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
পরিচালক জমজম বলেন, ‘গত চার বছরে আমি সম্মানের সঙ্গে প্রকল্পটি ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু এখন আমি অনন্ত জলিলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ জনগণের কাছে কিছু বিষয় উপস্থাপন করতে বাধ্য হচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকজন বন্ধু অনন্ত জলিলকে বাংলাদেশের একজন সুপারস্টার হিসেবে আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে তিনি তার চলচ্চিত্রগুলোর ভিডিও ফুটেজ ও মানুষের অভ্যর্থনার ভিডিওচিত্র দেখিয়ে আমাকে বলেন, তার সর্বশেষ সিনেমাটি প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার ব্যবসা করেছে। তার সর্বশেষ সিনেমাটি দেখার পর আমার বিশ্বাস ছিল যে ইরানের পেশাদার টিম নিয়ে আমরা এর থেকেও অনেক ভালো একটি সিনেমা নির্মাণ করতে পারব। তাই আমি প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিলাম।’
পরিচালক জমজম বলেন, ‘দিন- দ্য ডে’র চুক্তিপত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল যে অনন্ত জলিলের অর্থায়নে সিনেমাটি তৈরি হবে। কারণ এই ধারার সিনেমা ইরানের জনগণের পছন্দের নয়। চুক্তিপত্রে সিনেমাটির বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ডলার। কথা মতো সিনেমাটির লভ্যাংশের ৮৫% বিনিয়োগকারীকে ও ১৫% প্রযোজক হিসেবে আমার দেওয়ার কথা। তবে অনন্ত জলিল সিনেমাটির নির্মাণ ব্যয় দশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০০ কোটি) প্রচার করেছেন। যদিও তিনি এখন পর্যন্ত খরচের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পুরোটা পরিশোধ করেননি।’
এ ছাড়াও অনন্ত জলিল প্রতিদিন সিনেমাটির স্ক্রিপ্টে ও অভিনয়ে হস্তক্ষেপ করতেন বলে অভিযোগ করেন জমজম। তিনি বলেন, ‘শুটিং শুরুর দিনগুলোতে আমি বুঝতে পেরেছি যে এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু চুক্তির কারণে আমার বেরিয়ে যাওয়ার কোনও পথ ছিল না। আমি চাইনি আমার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হোক। কিন্তু তিনি ক্রমাগত স্ক্রিপ্ট পরিবর্তন করেছেন। গল্পে থাকা আইএস-জঙ্গীবাদ ইস্যু বদলে মাদক ও মাফিয়া ইস্যুত ঢুকিয়েছেন। লোকেশন সিরিয়া ও লেবানন বদলে আফগানিস্তান ও তুরস্ক করেছেন। যেহেতু সিনেমাটির ৮৫% বাংলাদেশের এবং অনন্ত জলিল বলতেন- বাংলাদেশের সিনেমা ও দর্শকদের তিনি আমার চেয়ে ভালো জানেন।’
পরিচালক জমজম অভিযোগ করেন, অনন্ত জলিল টাকা দেওয়ার আশ্বাসে তাকে দুই দফা ভারতের হায়দ্রাবাদে ও বাংলাদেশে নিয়ে যান। বাংলাদেশে দুই লাখ ডলারের পরিবর্তে ২৪ হাজার ডলার পরিশোধ করেন। যদিও পরিচালকের এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অনন্ত জলিল বলেন, ‘সে তো বাংলা লিখতে পারে না। বাংলাদেশ থেকে কেউ তাকে প্রভাবিত করছে। তারা চাচ্ছে আমি অনন্ত এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যেন না থাকি। আমি পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাবো।’
আইএ/ ২৩ আগস্ট ২০২২