জবির আইকিউএসি দপ্তরের কাগজপত্র তছনছ, সিসিটিভি ক্যামেরাও উধাও
ঢাকা, ২২ আগস্ট – জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের পিছনের অংশের গ্রিল কেটে ছাত্রী কমনরুমের ওয়াশরুমে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও সিসিটিভি ভেঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর কাচের গ্লাস ও দরজা ভেঙে চুরি হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাতে চুরির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা শাখা) সাইদুর রহমান রনি বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে চুরির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শনিবার বিকেলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শেষে এ কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সভা করেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের নীচতলায় ছাত্রী কমন রুমের ওয়াশরুমের গ্রিল কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। ওয়াশরুমের সবকয়টি বেসিনের কল চুরি হয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত কর্মচারীরা। এদিকে ওয়াশরুমে আইকিউএসি দপ্তরের কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায়। এই সেলের সামনের করিডোরে থাকা দুটি সিসি ক্যামেরার একটি ভেঙ্গে খুলে ফেলা হয়, আরেকটি অন্য দিকে ঘুরিয়ে রাখা হয়। ভাঙ্গা সিসিটিভি ক্যামেরাটিও পাওয়া যায়নি। এদিকে ছাত্রী কমনরুমে গেইটের তালা প্রায় অধিকাংশ চাবি দিয়েই খোলা যাচ্ছে।
এদিকে আইকিউএসি সেলের কম্পিউটার ও প্রিন্টারগুলোও খোলার চেষ্টা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রেও রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। দপ্তরের কাগজপত্রগুলো কিছুটা এলোমেলো অবস্থায় পাওয়া যায়। টেবিলের উপর থেকে একটি রক্তাক্ত টি-শার্ট পাওয়া যায়। দপ্তরের পাশে থাকা পরিবহন পুলের যন্ত্রাংশ দিয়ে সিসিটিভি ও দপ্তরের কাঁচের দরজাটি ভাঙ্গা হয়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি অফিসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গুচ্ছের পরীক্ষা থাকার কারণে শুক্রবার রাত আটটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে সকলকে বের করে দেয়া হয়েছে। এর পরে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এখন এ বিষয়ে আমাদের ভিসি স্যার কোতোয়ালি থানাকে তদন্তের বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক মো. নাহিদুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চুরি ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমিসহ আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. আইন-উল হুদা বলেন, এখানে চুরি করার মতো তেমন কোন কিছু নেই। এ কাজটা কে বা কারা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে করলো তাই এখন তদন্ত করার বিষয়। আর আমাদের এ সেল থেকে নথিপত্র নিয়েও কারও কোনো লাভ হবে না। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি জায়গায় কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। এ বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি তারাই এর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে শনিবার বিকেলে কোতোয়ালি জোনের সহকারি কমিশনার শারমিলা ইসলাম ও কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল থেকে তারা একটি রক্তাক্ত টি-শার্ট উদ্ধার করে। তদন্ত চলা পর্যন্ত দপ্তরের জিনিসপত্রে হাত না দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে কাচের দরজাটি মেরামতের অনুমতি দেয়া হয়।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২২ আগস্ট ২০২২