জাতীয়

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ১০ লাখ মানুষ অঙ্গীকার করেছেন

ঢাকা, ২০ আগস্ট – দেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) উজ্জীবন প্রকল্পের আওতায় ১০ লাখ গণস্বাক্ষর করা হয়েছে।

শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরার কাছে এ গণস্বাক্ষর হস্তান্তর করা হয়। এসময় ইউএসএআইডির পক্ষ থেকে বাল্যবিয়ে নিরসনের আহ্বান জানানো হয়।

এসময় বলা হয়, দেশে বাল্যবিয়ে আইনত দণ্ডনীয় হলেও এ প্রথা অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। করোনা মহামারি চলাকালীন বাল্যবিয়ে আরও বেড়েছে।
এদিকে, ১০ লাখ অঙ্গীকারের পাশাপাশি এ আয়োজনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অংশীদারত্বে ইউএসএআইডির উজ্জীবন প্রকল্পের আওতায় তৈরি ডিজিটাল লাইব্রেরি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এ লাইব্রেরিটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হয়েছে। যেখানে একইসঙ্গে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বিদ্যমান আইন ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।

মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা বলেন, একটি নারীর কখন বিয়ে হবে, কার সঙ্গে বিয়ে হবে, কখন সন্তান হবে, পরিবার পরিকল্পনার পদ্ধতি গ্রহণ, স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ ও নিরাপদ মাতৃত্ব এটি নারীদের সাধারণ অধিকার। কিন্তু অনেক দেশে দেখা গেছে নারীরা কিন্তু এই অধিকারগুলো চর্চা করতে পারছে না। অনেক মেয়ের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। অল্প বয়সে বিয়ে হলে অল্প বয়সে বাচ্চা হয়, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বাল্য বিয়ের ফলে মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু ও গর্ভ নষ্টের হার বেশি। কারণ নারীরা তখন মানসিক ও শারীরিকভাবে পরিপক্ক থাকে না।

এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল। নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী। ২০২০ সালে জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্মস্থানে নারীদের অংশগ্রহণ ফিফটি ফিফটি করার অঙ্গীকার করেছিলেন। এটা বাস্তবায়নে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ৩৫টি বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা মিশনেও নারীরা সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ বলেন, ‘বাল্যবিয়ে একটি বড় অপরাধ। একটি মেয়ের দ্রুত বিয়ে হলে তাকে মানবসম্পদ হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। তাদের দক্ষ জনসম্পদ হিসেবে গড়া প্রয়োজন। মেয়েদের মধ্যেও নেতৃত্ব তৈরি করা জরুরি।’অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ফরিদা পারভিন, ইউএসএআইডি মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন ডি স্টিভেনস প্রমুখ।

ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর স্টিভেনস বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও তাদের অন্যান্য অংশীদারদের সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেন সবাই মিলে এমন একটি দেশ গড়ে তোলা যায়, যেখানে শিশুরা তাদের মেধা ও দক্ষতা বিকাশের সব সুযোগ পাবে। তারা নিজেদের, পরিবারের এবং নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন।

সূত্র: জাগোনিউজ
আইএ/ ২০ আগস্ট ২০২২

Back to top button