অপরাধ

দ্রুত ধনী হতে ৮ বছরে ৫০০ মোটরসাইকেল চুরি

ঢাকা, ১৮ আগস্ট – কাঠের আসবাবপত্রে নকশার কাজ করত নূর মোহাম্মদ। ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে ছিল তার বাসা। সেখানেই এক চায়ের দোকানে মো. রবিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দু’জনে মিলে পরিকল্পনা করে কীভাবে দ্রুত ধনী হওয়া যায়। এক পর্যায়ে নূর মোহাম্মদ জানায়, তার কাছে করাত ধার দেওয়ার রেত আছে। সেটি দিয়ে ঘষে মোটরসাইকেলের চাবি পাতলা করে ‘মাস্টার কি’ বানানো যাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রবিনের জিক্সার বাইকের চাবি ঘষে একটি মাস্টার কি তৈরি করা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে সেটি দিয়ে স্থানীয় সারিঘাটে পার্ক করা একটি বাইক চুরি করে তারা। সেই থেকে দুই বন্ধুর চক্র গত সাত বছরে পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি করেছে।

মোটরসাইকেল চুরিতে জড়িত একটি বড় চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রের হোতা নূর মোহাম্মদ ও রবিন ছাড়া গ্রেপ্তার অপর তিনজন হলো- আবু বকর সিদ্দিক ওরফে সজল, মনির হোসেন ও মো. আকাশ। মঙ্গলবার রাজধানীর শনির আখড়া ও ধলপুর এলাকায় এ অভিযান চালায় ডিবি ওয়ারী বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত ২ এপ্রিল রাজধানীর টিকাটুলির সালাউদ্দিন ভবনের পার্কিং প্লেস থেকে সাদেক হোসেনের একটি জিক্সার মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় ওয়ারী থানায় করা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি। এ ছাড়া গেন্ডারিয়া থানার আরেকটি মোটরসাইকেল চুরির মামলাও ডিবিতে আসে। মামলা দুটি তদন্তে ডিবির সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ শুরু করে। প্রথমে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় নূর মোহাম্মদ ও রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে গ্রেপ্তার করা হয় অন্য তিনজনকে।

অপরাধের কৌশল সম্পর্কে ডিবি প্রধান বলেন, নূর মোহাম্মদ ও রবিন মোটরসাইকেল চুরির জন্য টার্গেট করা মোটরসাইকেলের আশপাশে গিয়ে ঘোরাঘুরি করে, চা-সিগারেট খায়। পরে সুযোগ বুঝে তাদের তৈরি করা মাস্টার কি দিয়ে স্টার্ট করে বাইক নিয়ে পালায়। এরপর চুরি করা বাইকটি তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে পোস্তগোলা বা দোহার এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে সীমান্ত থেকে আনা বাইক বলে কম দামে সেগুলো বিক্রি করে। চক্রটি মূলত পুরান ঢাকা এলাকায় চুরি করে।

সূত্র: সমকাল
এম ইউ/১৮ আগস্ট ২০২২

Back to top button