জাতীয়

প্রকল্পের মেয়াদ শেষ শুরুই হয়নি কাজ

রাজশাহী, ১৮ আগস্ট – রাজশাহী ওয়াসার শোধনাগার মেগা প্রকল্প ঋণ জটিলতায় আটকে আছে। চীনা ব্যাংক ঋণ ছাড় না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চার বছরের প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুনে শেষ হয়ে গেছে।

কিন্তু এখনো ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনাগার প্রকল্পটি শুরুই করা হয়নি। পদ্মা নদী থেকে পানি উত্তোলন ও পরিশোধন করে নগরবাসীর ঘরে সরবরাহ করার লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়।

৪ হাজার ৬২ কোটি ২২ লাখ টাকার প্রকল্প ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর একনেকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০২১ সালের ২১ মার্চ চীনের হুনান কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের সঙ্গে রাজশাহী ওয়াসার চুক্তি হয়। প্রকল্পের অর্ধেক অর্থ চীনের এক্সিম ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকের ঋণ আকারে দেওয়ার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এক্সিম ব্যাংক অর্থ ছাড় করছে না।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটির আওতায় গোদাগাড়ীর পদ্মার সারাংপুর পয়েন্টে একটি পানি শোধনাগার নির্মাণের কথা। এছাড়া রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের পাশের এলাকায় একটি বড় রিজার্ভার তৈরির কথা রয়েছে। পদ্মা থেকে পানি তুলে পরিশোধনের পর গোদাগাড়ী থেকে ২৭ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত পানি আনা হবে। প্রকল্পের আওতায় নতুন ৪৯ কিলোমিটার প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি লাইনের মাধ্যমে নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার কথা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দৈনিক ২০ কোটি লিটার পানি শোধন করা সম্ভব। এতে শতভাগ নগরবাসী বিশুদ্ধ পানি পাবে।

প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের ৪ হাজার ৬২ কোটি ২২ লাখ টাকার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ১ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ৩১৩ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক। প্রকল্পটি চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হুনান কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির নির্মাণ করার কথা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও অর্থ ছাড়ের কোনো চিঠি পায়নি রাজশাহী ওয়াসা। ফলে তারা কাজও শুরু করতে পারছে না।

রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী ও ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনাগার প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) পারভেজ মামুদ বলেন, এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগের (ইআরডি) সচিবের কোনো ঋণ চুক্তি হয়নি। ফলে ঋণ ছাড়ের বিষয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত বাতিল হয় কিনা এমন আশঙ্কায় আছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তিনি আরও জানান, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল। সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ এক বছর আগে শেষ করা হয়েছে।

জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীতে ৫২ শতাংশ পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। দেশের প্রধান চার মহানগরীর মধ্যে পানি সরবরাহের এ হার সবচেয়ে কম। বর্তমানে ১১০টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে। পানি সরবরাহ পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ৭১২ কিলোমিটার। দৈনিক ১৩ দশমিক ৫ কোটি লিটার পানি চাহিদার বিপরীতে ওয়াসা সরবরাহ করছে ৯ দশমিক ৯ কোটি লিটার। দৈনিক ৫ কোটি লিটার পানির ঘাটতি নিয়ে চলছে রাজশাহী ওয়াসা। এরই মধ্যে পানির দামও বাড়ানো হয়েছে।

সূত্র: যুগান্তর
আইএ/ ১৮ আগস্ট ২০২২

Back to top button