জাতীয়

সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ চা শ্রমিক-মালিক বৈঠক

ঢাকা, ১৮ আগস্ট – ১২০ টাকা মজুরি পেয়ে দুর্বিষহ দিন কাটছে চা শ্রমিকদের। এই টাকায় তাদের ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’। দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা না হলে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।

বুধবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে ধর্মঘট নিরসনে চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নেতারা এসব কথা বলেন।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের লংলা ভেলির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জু গ্বোস্বামি বৈঠক শেষে বলেন, আমাদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা। ১২০ টাকায় কোনোভাবেই সংসার চালানো সম্ভব নয়। আমরা ৩০০ টাকা মজুরির প্রস্তাব করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি না মানা হবে, আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাব। দাবি না মানলে আমরা রাজপথ একটুও ছাড়ব না।

তিনি বলেন, মালিকপক্ষ বলছে, আমরা আন্দোলন বন্ধ করলে, তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিধান্ত নেবেন। মালিকপক্ষ আমাদের বর্তমান মজুরির সঙ্গে আরও ১৪ টাকা যোগ করে মোট ১৩৪ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ১২০ টাকা মজুরিতে চলা খুবই কষ্টসাধ্য। আবার প্রতিদিন ২৩ কেজি চা পাতা তুলতে না পারলে, ১২০ টাকাও দেওয়া হয় না। একদিন কাজ না করলে রেশন কেটে নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, আমরা শ্রমজীবী মানুষ, কাজ করতে চাই, আন্দোলন করতে চাই না। আমরা রাষ্ট্রের কাছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবি করছি, কেন আমরা ন্যায্য মজুরি পাব না? আমরা শ্রমের সঠিক মজুরি চাই। যতদিন আমরা তা পাব না ততদিন আমরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে যাবো।

বৈঠকে বাংলাদেশ শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা এবং মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।

শ্রমিক ধর্মঘটে গত ১০ দিন ধরে সারাদেশের বাগান থেকে চা পাতা উত্তোলন, কারখানায় প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের চা-শিল্প। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীত করার দাবিতে দেশের ২৪১ চা-বাগানে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা।

এখন চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। গত কয়েক দিনে গাছে গাছে সবুজ পাতা আর কুঁড়ি অঙ্কুরিত হয়েছে। কারখানায় নিয়ে এসব পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণের ঠিক এ সময়ে স্থবির হয়ে পড়েছে চা-শিল্পের যাবতীয় কর্মযজ্ঞ। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।

সূত্র: জাগোনিউজ
আইএ/ ১৮ আগস্ট ২০২২

Back to top button