পশ্চিমবঙ্গ

‘আমার বাড়িতে ইডি, সিবিআই গেলে কী করবেন?’ তৃণমূলকর্মীদের প্রশ্ন মমতার

কলকাতা, ১৪ আগস্ট – ‘অ্যাটাকই হলো সেরা ডিফেন্স’ ফুটবল মাঠের সেই কৌশল ধরেই ময়দানে নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলেন, ‘আমার বাড়িতে (ইডি ও সিবিআই) গেলে কী করবেন?’

রবিবার বেহালার ম্যান্টনে তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আমি বলি কী ভয় লাগছে?’ এ সময় শ্রোতারা না বলে উঠেন।’

মমতা বলেন, কাল যদি আমার বাড়িতে (ইডি ও সিবিআই) যায়, আপনারা কী করবেন? রাস্তায় নামবেন তো?’ তাতে তৃণমূল সমর্থকরা ‘হ্যাঁ’ বলে উঠেন। উত্তরে মমতা বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করবেন তো? আমারটা আমি একাই লড়ে নেবো। কিন্তু আপনাদেরটা আপনাদের লড়ে নিতে হবে তো!’ তাতেও সম্মতি জানান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যদি আমার কোনও সহকর্মীকে ইচ্ছা করে জেলে ধরে রেখে দেয়, তাহলে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।

গত মাসেই স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই দিনকয়েক আগে গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘কী বলছে এখন? গরুর রুপি নিয়েছে? গরুর রুপি কোথা থেকে আসে? উত্তরপ্রদেশ থেকে কেন তুমি গরু পাঠাও বাংলা দিয়ে? বিহার থেকে কেন তুমি গরু পাঠাও বাংলা দিয়ে? আমি অনেক বার বলেছি, আমাদের বর্ডারে ঢুকতে দেবো না। গরু দেখার দায়িত্ব কার? বিএসএফের। বিএসএফের মিনিস্টার কে? হোম মিনিস্টার অমিত শাহ। কয়লা কার অধীনে? কোল ইন্ডিয়ার অধীনে। যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যারা স্বাধীনতা আন্দোলনের পাঁচটি গান বলতে পারেন না, তারা আবার বেশি দেশপ্রেমের কথা বলছেন। একবার ঝান্ডার কথা বললে তিন বার ডান্ডার কথা বলে থাকেন। আজ এখানে না এলে ওরা বলতো, যেহেতু একজন জেলে আছেন, তাই উনি (মমতা) এলেন না।

তিনি বলেন, একদিন বিচার তো হবে। কেউ অন্যায় করলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হোক। বিষয়টি বিচারাধীন থাকলে কোনও মন্তব্য করবো না। আইন আইনের গতিতে চলবে। তাতেই বোঝা যাবে যে, কোনটা হয়েছে আর কোনটা হয়নি। কেঁচো খুঁড়তে তো গোখরো বেরিয়ে যাবে। তবে সত্যি কেউ অন্যায় করলে এজেন্সি গ্রেফতার করুক। তাতে আমার কোনও সমস্যা নেই।

তৃণমূল নেত্রী বলেন, পরশু কেষ্টকে গ্রেফতার করলেন কেন? কী করেছিল কেষ্ট? যতবার নির্বাচন হয়েছে, ততবার ওকে বেরোতে দেননি। কেষ্টকে তো কোনও দিন বেরোতে দেয় না। আটকে দেয়। জেলে আটকালে কী হবে? ছেলেটা গত দুই বছরে কত কষ্ট পেয়েছে। ক্যানসারে স্ত্রী মারা গেছে। প্রতিদিন কলকাতা-বোলপুর করতো। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ওর স্ত্রীর যখন অপারেশন হয়েছিল, তখন কেষ্ট বলেছিল যে ওর বউ বলেছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ কর।

মমতা বলেন, ওদের (বিজেপি) গায়ে হাত দেবেন না। কুকুর কামড়ালে কখনও কুকুরকে কামড়াতে নেই। রাতবিরেতে বাড়িতে ঢুকে যাচ্ছে (পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে সকালে অভিযান চালিয়েছিল ইডি)। কেষ্টর বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে। কতজনকে গ্রেফতার করবে? কেষ্টরা এজেন্সিকে ভয় পায় না। একজন কেষ্টকে ধরলে লাখ-লাখ কেষ্ট উঠে আসবে। জেলে ভরো আন্দোলন শুরু করবো।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দিল্লিতে গেলেই বলে যে সেটিং করতে গিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে বৈঠক করতে গিয়েছিলাম। রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ চাইবো না? রাজ্য থেকেই তো টাকা তুলে নিয়ে যায়। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/১৪ আগস্ট ২০২২

Back to top button