ইউরোপ

যে দুই উপায়ে পুতিনের পতন দেখছেন সাবেক এমআই-সিক্স প্রধান

মস্কো, ১২ আগস্ট – রাশিয়ায় ভ্লাদিমির পুতিনের শাসন হয় তার স্বাস্থ্যের কারণে বা অন্য কোনও রুশ গ্রুপের হস্তক্ষেপের কারণে শেষ হবে। এমন ধারণা ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাজ্যের বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬ এর সাবেক প্রধান স্যার রিচার্ড ডিয়ারলোভ। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি জানান, পুতিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ছেড়ে বিলাসী অবসর জীবন যাপন করতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না।

পশ্চিমা গোয়েন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বাস করে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিপুল পরিমাণ সম্পদ জমা করেছেন। হারমিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী (সিইও) বিল ব্রাউডার ২০১৭ সালে মার্কিন সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটিকে জানান, রুশ প্রেসিডেন্টের মোট সম্পদ ২০ হাজার কোটি ডলার বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান ডিয়ারলোভ পুতিন সম্পর্কে বলেন, ‘অনেক বড় বড় স্বৈরশাসকের মতো, আমি শুধু ভাবছি তিনি কি কখনও তার অর্জিত লাভের সুবিধা বা ফল ভোগ করতে পারবেন… ইউক্রেনে তিনি ভয়ঙ্কর ভুল করেছেন। এর ফলাফল কী হবে তা ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন, তবে তিনি এক ধরনের অপ্রীতিকর পরিণতিতে আসতে চলেছেন’।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পুতিনের অসুস্থতার গুঞ্জন বেড়েই চলেছে। যদিও ক্রেমলিন বারবার এই ধরনের ইঙ্গিতের কথা অস্বীকার করে আসছেন। সোশাল মিডিয়া এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে পুতিনের সম্ভাব্য উত্তরাধিকার নিয়ে আলোচনা চলছে। মার্চে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দারা অভিযোগ তোলে রাশিয়ার অভিজাতরা পুতিনকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পরিকল্পনা করছেন। তার পরিবর্তে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার পরিচালক আলেক্সান্ডার বোর্তিনিকভকে ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা চলছে বলেও ধারণার কথাও জানান ইউক্রেনীয় গোয়েন্দারা।

এর আগে গত জুলাই মাসে অন্য এক সাক্ষাৎকারে ডিয়ারলোভ বলেন, পুতিন অসুস্থ হয়ে সরে দাঁড়ালে তার দায়িত্ব নিতে পারেন রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের মহাসচিব নিকোলাই পাত্রুশেভ। ওই সময়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, এই মুহূর্তে এটি পাত্রুশেভ হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে ওই ব্যক্তি রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকবে কিনা, তা সম্পূর্ণ অন্য প্রশ্ন’।

এছাড়া মার্চে অন্য এক সাক্ষাৎকারে ডিয়ারলোভ জানান, ২০২৩ সালের পর পুতিন তার স্বাস্থ্যের কারণে আর প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন না বলে বিশ্বাস করেন তিনি। ওই সময় তিনি বলেন, আমি মনে করি তিনি ২০২৩ সালের মধ্যে চলে যাবেন, তবে সম্ভবত স্যানিটোরিয়ামে (হাসপাতাল বা অন্য কোনও স্বাস্থ্যকর স্থান) যাবেন। তিনি আরও বলেন পুতিন একবার এই সুবিধা ছেড়ে গেলে পরে আর ‘রাশিয়ার নেতা’ হিসাবে উঠে আসতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, ৬৯ বছর বয়সী পুতিন স্বেচ্ছায় খুব তাড়াতাড়ি ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার কোনও ইঙ্গিত দেননি। ২০২১ সালে নতুন আইন প্রবর্তন করে বর্তমান মেয়াদের পর আরও দুইবার ছয় বছর মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ তৈরি করেছেন। এর ফলে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সুযোগ তৈরি হয়েছে তার।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/১২ আগস্ট ২০২২

Back to top button