ক্রিকেট

বিসিবি মানেই যেন ‘বিনোদন’

ঢাকা, ০৫ আগস্ট – ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ আসরে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন এনামুল হক বিজয়। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত লিগে ৩ সেঞ্চুরি ও ৮ ফিফটিতে বিজয়ের নামের পাশে ছিল ১০৪২ রান! যা লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এক আসরে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড। এমন পারফর্মেন্স করে ডাক পান জাতীয় দলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে তার জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন ঘটে।

কিন্তু ওয়ানডে ফরম্যাট দিয়ে নয়, টেস্ট ফরম্যাটে!
উইন্ডিজকে ওয়ানডেতে ৩-০ ব্যবধানে বাংলাদেশ ধোলাই করলেও এনামুলের সুযোগ হয়নি একাদশে। বরং টেস্টের পর তাকে টি-টোয়েন্টিও খেলানো হয়েছে। দুটি ফরম্যাটেই তিনি ব্যাট হাতে কিছু করতে পারেননি। এরপর এলো জিম্বাবুয়ে সফর। এই সফরেও তাকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলানো হয়। যথারীতি তিনি ব্যর্থ হন। অতঃপর আজ তিন বছর পর ওয়ানডে ফরম্যাটে সুযোগ পেয়েই খেলেন ৬২ বলে ৭৩ রানের ঝড়ো ইনিংস।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে বারবার প্রক্রিয়া নিয়ে কথা উঠছে। ফর্ম হারিয়ে ফেলা একজন ক্রিকেটারকে কীভাবে ফর্মে ফেরানো যায়, জাতীয় দলের জন্য আবারও প্রস্তুত করা যায়, সেই প্রক্রিয়াটা এদেশে ফলো করা হয় না। নাহলে, ওয়ানডেতে ভালো করা বিজয়কে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি দিয়ে জাতীয় দলে ফেরানো হতো না। শুধু বিজয়ের ঘটনাই নয়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিসিবি সভাপতি সম্ভাব্য টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে চারজনের নাম বলেছেন। যার মাঝে আছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নামও!

বিষয়টি নিয়ে গতকাল থেকেই সোশ্যাল সাইটে চলছে হাসাহাসি। যাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানো হয়েছে বা বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে, তাকেই আবার নতুন করে অধিনায়ক বানানো হবে! তাহলে সরানো হলোটাই বা কেন? বা নতুন অধিনায়ক নির্বাচনের প্রশ্ন আসছে কেন? শুধু তাই নয়, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাহমুদউল্লাহকে একাদশেও রাখা হয়। কিন্তু এই সিরিজ থেকে তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল! ওই ম্যাচে নেতৃত্ব দেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সাধারণ ক্রিকেটার হিসেবে খেলা মাহমুদউল্লাহ বলার মতো কোনো পারফর্ম করতে পারেননি।

সিনিয়রদের বিশ্রাম দিয়ে তরুণদের নিয়ে টি-টোয়েন্টি দল গঠন করে পাঠানো হয় জিম্বাবুয়েতে। সফরের আগে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলেন, এই তরুণরা ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে ধোলাই হলেও তিনি ‘আপসেট’ হবেন না। বিষয়টা ভালো ছিল। তরুণদের জন্য দারুণ মোটিভেশন। কিন্তু শেষ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহকে একাদশে নিয়ে তরুণদের আত্মবিশ্বাসে প্রথম আঘাত হানা হয়। আর ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘আমি খুব হতাশ!’ পাশাপাশি সম্পূর্ণ দোষ তিনি ক্রিকেটারদের ওপর চাপান!

গত দুই মাসেরও কম সময়ে ঘটেছে এসব ঘটনা। এভাবেই ক্রিকেটপ্রেমীদের বিনোদন দিয়ে যাচ্ছে বিসিবি। বিশ্বের আর কোনো দেশের ক্রিকেটে কি পাওয়া যাবে এমন বিনোদন?

সূত্র: কালের কণ্ঠ
এম ইউ/০৫ আগস্ট ২০২২

Back to top button