ঢাকা

পরিমাপে তেল কম দেওয়ায় রাজধানীর সেইপেট্রলপাম্পকে জরিমানা


ঢাকা, ২ আগস্ট – ‘সঠিক পরিমাণে তেল চাই’ এই দাবিতে রাজধানীর কল্যাণপুরে সোহরাব সার্ভিস স্টেশনের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান করেন শেখ ইশতিয়াক আহমেদ নামে একজন যুবক। আজ সেই পেট্রলপাম্পে অভিযান পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।

মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় পেট্রলপাম্পটির দুটি ইউনিটে প্রতি ১০ লিটার ডিজেলে ৪০ মিলিলিটার করে কম দেয়ায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন বিএসটিআইয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আজ সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে এসে লিখিত অভিযোগ করেন বেসরকারি ব্যাংকের সেই কর্মকর্তা। এরপর অভিযানে নামে বিএসটিআই।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযানে দক্ষিণ কল্যাণপুরের খালেক ফিলিং স্টেশনে প্রতি ১০ লিটার ডিজেলে ৫০ মিলি কম, দুটি ইউনিটে অকটেনে যথাক্রমে ৪০ মিলি ও ৩১০ মিলি কম দেওয়ায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় রহমান ফিলিং স্টেশনে ডিজেল ইউনিটে প্রতি ১০ লিটারে ৬০ মিলি কম দেওয়ায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তেলের পরিমাণ কম পাওয়ায় এই তিন ফিলিং স্টেশনের ৬টি ইউনিট সিলগালা করা হয়েছে। বিএসটিআইয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসিব সরকার।

বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক (সিএম) রিয়াজুল হক বলেন, মাপে তেল কম দেয়ার প্রমাণ পাওয়ায় সোহরাব ফিলিং স্টেশনকে দুই লাখ টাকা ও পার্শ্ববর্তী আরও দুটি ফিলিং স্টেশনকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে ইসতিয়াক আহমেদ অভিযোগ জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়টি বলেন।

তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে ফিলিং স্টেশনগুলোয় তেলের মান ও পরিমাণ নিয়ে অভিযোগ আসছে। তারা বিএসটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলে সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করবেন।

উল্লেখ্য সোমবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন কল্যাণপুরে ওই পেট্রোল পাম্পে। তাকে ঘিরে আছেন পেট্রোল পাম্পের কর্মচারীরা। কেউ কেউ টিপ্পনীও কাটছেন। কিন্তু তাতে মোটেও বিচলিত নন তিনি।

ইশতিয়াক জানান, টাকার পরিমাণে প্রাপ্য তেল বুঝে না পাওয়ার এই প্রতারণা যাতে একেবারে বন্ধ হয়, সেজন্যই তিনি বিক্ষোভ করছেন। প্রয়োজনে এই আন্দোলন আরও চালিয়ে যাবেন। তবে গ্রাহক ঠকানো থামাতে হবে। তার দাবি, ৫০০ টাকার তেল কিনতে ডিপোতে এলে, তাকে পরিমাণে অনেক কম দেয়া হয়। প্রতিবাদে সোচ্চার হন তিনি।

ইশতিয়াক আরও জানায়, এটা কর্মচারীদের ভুল নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে তারা এমন করেছে এবং এভাবে অনেককে ঠকানো হচ্ছে। যেহেতু সবাই প্রতারিত হচ্ছে। তাই আমি প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তবে থানায় কোনও অভিযোগ করবেন না জানিয়ে ইশতিয়াক বলেন, এভাবেই তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান।

কেন ইশতিয়াককে টাকার পরিমানের চেয়ে কম তেল দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে সোহরাব সার্ভিস সেন্টারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। পরে এক কর্মাচারী অযুহাতের সুরে চুরির পক্ষে সাফাই গান।

রাজধানীর বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পের যারা নিয়মিত গ্রাহক তাদের দাবি, হাতেগোনা কয়েকটা পাম্প ছাড়া বেশিরভাগ পাম্পেই সঠিক পরিমানে তেল পাওয়া যায় না। গ্রাহকরা আরও জানান, ইশতিয়াকের মতো কেউ প্রতিবাদী না হলেও এই ভোগান্তির অবসান চান তারা।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২ আগস্ট ২০২২

Back to top button