জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে এলেও বাধা দেবো না

ঢাকা, ২৪ জুলাই – প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে এলেও বিএনপিকে বাধা দেওয়া হবে না। তাদের বসিয়ে চা খাওয়ানো হবে। তবে বোমাবাজি ও ভাঙচুর করলে বাধা দেওয়া হবে, উপযুক্ত জবাব তারা পাবে।

শনিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের যৌথ সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। গণভবন থেকে সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো বলে দিয়েছি- তারা (বিএনপি) যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে, পুলিশ যেন বাধা না দেয়। বিশেষ করে বাংলামটরে বাধা দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি। আসুক না হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে। আমি বসাব, চা খাওয়াব। কথা বলতে চাইলে শুনব। কারণ আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনো বাধা নেই। কিন্তু তারা সেটা তো করেই যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘তারা কথা যত পারুক বলুক। যদিও সারাদিন কথা বলার পর বলে আমাদের কথা বলতে দেয় না। মিটিং করে লোক হয় না, বলে আমাদের লোক আসতে দেয় না। অভিযোগ তো তারা করে। কিন্তু তাদের কাছে লোক আসবে কেন? কোন আশায় আসবে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারী এবং ১০ ট্রাক অস্ত্রের চোরাকারবারি ও অর্থ পাচারকারীরা বিএনপির নেতা। তাঁরা কি দেশে একটা মানুষও পাননি নেতা বানানোর মতো? বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ অনুচ্ছেদে আছে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলটির নেতা হতে পারবেন না। কিন্তু বিএনপি সেটাই করেছে।

নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারী উদ্দেশে তিনি বলেন, এদেশে নির্বাচনের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। বিএনপির আমলে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করা হয়েছিল। ১০টি হোন্ডা, ২০টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা- এই তো ছিল বিএনপির নীতি। মাগুরা নির্বাচন ও ঢাকা-১০ আসনের নির্বাচনও আমরা দেখেছি।

বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কিছু লোক আছে সারাক্ষণ দোষ আর খুঁত ধরার চেষ্টায় থাকে। বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে। কারণ ডিজেল, এলএনজিসহ প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। যে জার্মানি সুর তুলেছিল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না- তারা আবার সেটাতেই ফেরত গেছে।

বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশবাসীকে কৃচ্ছ্রতা সাধনের অনুরোধ করে তিনি বলেন, সবাইকে সঞ্চয় করতে হবে। আদমশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা খুব একটা বাড়েনি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬ কোটি ৫০ লাখের বেশি লোকসংখ্যা হতে পারে। সামান্য কিছু হয় তো পরে বাড়বে বন্যাকবলিত এলাকা ধরে। কেউ এদেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটি কিংবা ১৭ কোটি বলে। কিন্তু দেশে এত জনসংখ্যা নেই। এই মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারব। কিন্তু লুটেরারা ক্ষমতায় এলে কী করবে- সেটা জানি না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সবাইকে দেখে ভালো লাগল। কিন্তু আমি বন্দিখানায় বসে আছি। তাও সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছিল বলেই সবার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।’

শোকের মাস কর্মসূচি ঘোষণা :সভায় শোকের মাস আগস্ট ও জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, শোকের মাসের প্রথম প্রহরে ১২টা ১ মিনিটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর অভিমুখে আলোর মিছিল করবে। ১ আগস্ট কৃষক লীগ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্তদান ও প্লাজমা সংগ্রহ কর্মসূচি পালন করবে।

ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচমএম খায়রুজ্জামান লিটন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম প্রমুখ।

সূত্র : সমকাল
এন এ/ ২৪ জুলাই

Back to top button