জাতীয়

‘দেখেশুনে’ মুখ খুলবেন পি কে হালদার

কলকাতা, ১৫ জুলাই – বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ-এর অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া পি কে হালদার বলেছেন, এতদিন চার্জশিটের অপেক্ষায় ছিলাম, আজ হাতে পেলাম, দেখেশুনে এবার মুখ খুলব, তার আগে নয়।

শুক্রবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতের এজলাস থেকে কোর্ট লকআপে যাওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।

এদিন বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে সপ্তম দফায় কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তোলা হয়। বেলা ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ আদালতে আনা হয় অভিযুক্তদের। দুপুর ১২টা নাগাদ বিচারকের এজলাসে তোলা হয়।

দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে সিবিআই স্পেশাল কোর্ট-৩ বিচারক জীবন কুমার সাধু ফের তাদের ২৬ দিনের বিচার বিভাগীয় জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ১০ আগস্ট তাদের ফের কলকাতার আদালতে তোলা হবে।

আদালতে শুনানি চলাকালে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, ১০০ পাতার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে আদালতে। এদিন সেই চার্জশিটের কপি অভিযুক্তদের আইনজীবীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আগামী দিনে তদন্ত প্রক্রিয়া চলার মধ্যে নতুন যা তথ্য আসবে তা সম্পূরক চার্জশিট আকারে আদালতে পেশ করা হবে।

পিকে হালদারের মেডিকেল চেকআপের জন্য মামলাকারীর পক্ষ থেকে আদালতে যে আবেদন করা হয়েছিল, বিচারক তাতে অনুমতি দেন। সেক্ষেত্রে আগামী ১০ আগস্ট পিকে হালদারের মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে জমা করতে কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি ইডি গোয়েন্দাদের প্রয়োজনে জেলে গিয়ে আসামিদের জেরা করার অনুমতিও বহাল রাখেন বিচারক।

এর আগে সোমবার (১১ জুলাই) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে ‘প্রাথমিক চার্জশিট’ জমা দিয়েছে ইডি। ১০০ পাতার ওই চার্জশিটে পিকে হালদারসহ ছয় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রয়েছে। এক্ষেত্রে কেবলমাত্র ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-২০০২’ মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়েছে। চার্জশিটে নাম রয়েছে তাদের দুটি সংস্থার নামও।

তবে তদন্তের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে তদন্তে উঠে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের। ইডির দাবি ছিল, এ মামলার প্রায় ৫৫ জন বাংলাদেশির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

এদিন শুনানি শেষে আদালত থেকে কারাগারে যাওয়ার পথে পিকে হালদারকে আরও একবার জিজ্ঞাসা করা হয় চার্জশিটের কপি নিয়ে তিনি কিছু বলবেন কিনা? জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, চার্জশিট পেয়েছি, বলব।’

সূত্রের খবর, চার্জশিট পড়ে দেখার জন্য নিজের ও সহযোগীদের চার্জশিট আদালত থেকেই আইনজীবীদের মাধ্যমে নিয়ে নিয়েছেন পিকে।

অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে গত ১৪ মে পিকে হালদারের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে। এ মুহূর্তে অভিযুক্ত পিকে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে, অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের নারী সেলে।

সূত্র: সমকাল
এম ইউ/১৫ জুলাই ২০২২

Back to top button