এশিয়া

পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে আবেকে হত্যা করা হয়েছে

টোকিও, ০৮ জুলাই – পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হামলাকারী আগে থেকেই আবেকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। জাপানের পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এমন তথ্য জানিয়েছে। খবর এনডিটিভির।

স্থানীয় সময় শুক্রবার জাপানের পশ্চিমাঞ্চলের নারা শহরে রাজনৈতিক সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় পেছন থেকে গুলি করা হয় ৬৭ বছর বয়সী শিনজো আবেকে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। পরে সেখানেই তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় জাপানের পুলিশ তাৎসুইয়া ইয়ামাগামি নামের ৪১ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। হামলাকারী জাপানের সাবেক নৌসেনা (জাপানিজ মেরিটাইম সেলফ ডিফেন্স ফোর্স)। নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি একটি অস্ত্র দিয়ে তিনি শিনজো আবেকে গুলি করেন। আটকের পর তার অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। হামলার সময় তার পরনে ধূসর রঙের টি-শার্ট ও ট্রাউজার ছিল।

ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির একটি সূত্র জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শিনজো আবের গলা থেকে রক্তপাত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জাপানের গণমাধ্যম এনএইচকের খবর বলছে, ঘটনাস্থলে কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। এরপর ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে যায়। ঘটনাস্থলে থাকা এনএইচকের এক সংবাদকর্মী বলেছেন, আবের বক্তব্য চলাকালে তিনি দুটি গুলির শব্দ শুনেছেন।

জাপানে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আবে। তিনি দেশটিতে সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অসুস্থতার কারণে ২০২০ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। তবে ক্ষমতায় থাকা লিবারেল ডেমোক্রেটিক দলের (এলডিপি) ওপর তার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।

তার অনুসারী প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আগামী রোববার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ভোটের সম্মুখীন হবেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, তিনি আবের ছায়া থেকে সরে এসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি শক্তিশালী করার চেষ্টা করছিলেন।

আবে তার সরকারের অর্থনৈতিক নীতির জন্য সুপরিচিত। তাঁর সরকারের এই অর্থনৈতিক নীতি ‘আবেনমিকস’ নামে পরিচিত। তিনি প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করেছিলেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আবের সরকার প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ করার অনুমতি দেয়। ২০১৪ সালে আবের সরকার সংবিধানে ঐতিহাসিক পরিবর্তন আনে।

২০০৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন আবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনিই ছিলেন সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। ২০১২ সালে তিনি দ্বিতীয়বার জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন। আবে সম্ভ্রান্ত রাজনৈতিক পরিবারের উত্তরসূরি। তার বাবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।

জাপানে বন্দুক সহিংসতার ঘটনা খুব কম। দেশটিতে ছোট বন্দুকের (হ্যান্ডগান) ব্যবহার নিষিদ্ধ।

সূত্র: সমকাল
এম ইউ/০৮ জুলাই ২০২২

Back to top button