ব্যবসা

আরও আড়াই লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন

ঢাকা, ০৪ জুলাই – তিন দিনের ব্যবধানে বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বেসরকারিভাবে আরও আড়াই লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ১২৫ প্রতিষ্ঠানকে শর্তসাপেক্ষে এই চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ৩০ জুন ৯৫টি প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ নয় হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ দুই দফায় মোট ছয় লাখ ৫৫ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলো।

সোমবার (৪ জুলাই) খাদ্য মন্ত্রণালয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাল আমদানির এই অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ দফায় দুই লাখ ৪৬ হাজার টন চাল আমদানি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে দুই লাখ চার হাজার টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল এবং ৪২ হাজার টন আতপ চাল আমদানি করা যাবে।

এসব চাল আমদানির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে খাদ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, চাল আমদানির জন্য ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে এলসি খুলতে হবে এবং তা খাদ্য মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিক অবহিত করতে হবে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে কেউ এলসি খুলতে ব্যর্থ হলে তার বরাদ্দের আদেশ বাতিল হয়ে যাবে।

আমদানি করা সব চাল ১৭ আগস্টের মধ্যে বাজারজাত করার নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, চালের আমদানি, গুদামজাত এবং বাজারজাতকরণের সার্বিক তথ্য জানাতে হবে মন্ত্রণালয়কে। কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত বরাদ্দের বেশি আমদানি করতে পারবেন না। এসব চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে পুনরায় প্যাকেটজাত করা যাবে না। যেভাবে বস্তা অবস্থায় আমদানি করা হবে, সেভাবেই বিক্রি করতে হবে।

এ বছর ধানের ভরা মৌসুমেও চালের বাজারে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে। এ কারণে সরকার চাল আমদানির উদ্যোগ নেয়। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানিতে শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এর আগে গত ১ জুলাই দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে ৪ লাখ ৯ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। আমদানিকারক ৯৫টি প্রতিষ্ঠান ওই চাল আমদানি করবে। আগামী ১১ আগস্টের মধ্যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাল আমদানি করতে বলা হয়েছে। চিঠির শর্তানুযায়ী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে চালের এলসি খুলতে হবে এবং ১১ আগস্টের মধ্যে আমদানি করা চাল দেশে বাজারজাত শেষ করতে হবে। আমদানি করা চালের মধ্যে ৩ লাখ ৭৯ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল ও ৩০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল রয়েছে।

সময়মতো এলসি খুলতে বা আমদানি করতে ব্যর্থ হলে সেসব ব্যবসায়ীর চাল আমদানির অনুমতি বাতিল হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে চালের দাম কমাতে এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২২ জুন থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আমদানি করা চালের ওপর শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ করেছে। তবে প্রতিটি চালান আমদানির সময় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর চালের বাজার অস্থির। এক মাসে চিকন চালের দাম ৯ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)। এছাড়াও দেশের উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমের কিছু অংশে বন্যা ও প্রতিকূল আবহাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব ধানের ফলনে পড়েছে। যে কারণে চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন রাইস মিল মালিকরা। বিশেষ করে সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ বন্যায় বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলসহ অন্যান্য এলাকায় ব্যাপক ফসলহানি হয়েছে। এ অবস্থায় খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় সরকার বেসরকারিখাতের মাধ্যমে চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে।

সূত্র : রাইজিংবিডি
এম এস, ০৪ জুলাই

Back to top button