ময়মনসিংহ

২শ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে গেলেন যুবক

আবদুল কাদির

ময়মনসিংহ, ২৮ জুন – নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে প্রমত্তা নদীর বুকে নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু মহাধুমধামে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ শুধু মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও মাদারীপুরের জাজিরা প্রান্তেই নয়। এই আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। সেই আনন্দে অংশ নিতে ২শ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে যান মো. সুজন মিয়া (২৯) নামের এক রাইস মিল মিলের শ্রমিক।

মোঃ সুজন মিয়া ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের রুকনাকান্দা গ্রামের মোঃমাহমুদ আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় রাইস মিলে শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। ইচ্ছা থাকলেও পারিবারিক অভাব অনটনে কারণে লেখাপড়া করা হয়নি সুজনের। তবে, চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছেন। এরপর আর কোন দিন স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। তখন থেকেই মানুষের টুকটাক কাজ করে ও ঘুরাফেরা করে দিন কাটাতেন। কিন্তু বাইসাইকেল চালানোর শখ ছিল খুব বেশি। বাইসাইকেল চালিয়ে আগেও অনেক জায়গায় সফর করেছেন। তবে, বাইসাইকেল চালিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়াটাই তার কাছে ছিল সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ, তিনি সফলও হয়েছেন।

সুজন বলেন, আগে নিজের ছোট একটা ব্যবসা ছিলো করোনার কারণে ব্যবসায় লোকসান হয়ে এখন ৩ বছর যাবত আমি শ্রমিকের কাজ করেছি। তবে, সাইকেল চালানোর শখ ছিল। যে কারণে আমি নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাই। আমার ইচ্ছা ছিল সাইকেল চালিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে যাব, সেই ইচ্ছা থেকেই গত শুক্রবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নিজের বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে রওনা দেই। পরে ময়মনসিংহের ত্রিশালে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করি। সেখান থেকে ভালুকা গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে আবারও রওনা দেই। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ঢাকার এয়ারপোর্ট এলাকায় আমার বোনের বাসাতে রাএি যাপন করি।

পরদিন শনিবার (২৫ জুন) ভোররাত ৪ টার দিকে বোনের বাসা থেকে সাইকেল নিয়ে রওনা করি। পথে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে। পথে এক জায়গায় পুলিশ আমাকে চেক করে যেতে মানা করে। পরে অনেক অনুরোধ করার পর পুলিশ আমাকে যেতে দেয়। আমি তো ওইসব জায়গার নাম জানি না। একপর্যায়ে বাইপাস নামক একটি রোড থেকে আমাকে আর যেতে দেয়া হয়নি। সেখান থেকে গুগল ম্যাপ ও মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করে করে কম করে হলেও ৩০ কিলোমিটার ঘুরে পদ্মা সেতুর কাছে যেতে যেতে বেলা সাড়ে ১১ টা বেজে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য পদ্মা সেতুতে উঠার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছিল। সেই সুযোগে পদ্মা সেতুতে উঠি। সেখানে কেউ কেউ ভিডিও করছেন আবার কেউ কেউ ছবি তুলেছেন। কিন্ত, আমার মোবাইলে চার্জ না থাকায় আমি কোন ছবি তুলতে পারিনি।

সূত্র : বিডি২৪লাইভ
এম এস, ২৮ জুন

Back to top button