বগুড়ায় যমুনার পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে : নিচু এলাকা প্লাবিত
বগুড়া, ১৯ জুন – বগুড়ার যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি এখন বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার দুপুর ১২টা থেকে রোববার দুপুর ১২টা) নদীতে পানি বেড়েছে ১২ সেন্টিমিটার।
অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চলের ৭৫৮ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
তবে পানি বৃদ্ধির ফলে কতো গ্রামে ও কতো পরিবার বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন সেই তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাছেদুজ্জামান রাসেল জানান, তার ইউনিয়নে বাঁধের পূর্বপাড়ে কয়েকটি গ্রাম থাকলেও সেখানে বসতি খুব কম। পানি বৃদ্ধির কারণে ঐ এলাকায় যেসব বাড়িঘর আছে সেগুলোর অধিকাংশেই পানি উঠেছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন খবর পাওয়ার পরপরই সেখানে বসবাসকারী লোকজন বাঁধের এইপাড় এসে আশ্রয় নিয়েছে। তবে বাঁধের পশ্চিম পাশে এখনও পানি প্রবেশ করেনি। গত দুইদিন হলো পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারিভাবে এখনও কোন ত্রাণ সহায়তা পাওয়া যায়নি। তিনি সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’র সাথে ত্রাণের জন্য কথা বলেছেন বলে জানান।
উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ড এখন পানির মধ্যে। এই তিনটি ওয়ার্ডে চারটি গ্রাম রয়েছে। গ্রামগুলো বাঁধের পূর্বপাশে। গ্রামগুলোয় পানি ওঠায় প্রায় সাড়ে ৩শ’ ঘরবাড়ির ১৫ হাজারের মতো মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে গবাদি পশু সঙ্গে করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে তারা ঝুপড়ি ঘর করে বসবাস করছে। পানি নেমে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা সেখানেই থাকবে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) এনামুল হক জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট এবং শেরপুরের ৭৫৮ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। নিমজ্জিত হওয়া ফসলের মধ্যে রয়েছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা এবং শাক সবজি। পানি নেমে যাওয়ার পর বন্যার কারণে কি পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হলো এটা নির্ণয় করা যাবে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, পানি আরো ৪-৫ দিন বাড়তে পারে। কারণ ২১ তারিখ পর্যন্ত ভারতে বৃষ্টিপাত হবে এমনটা জানতে পেরেছি। যেহেতু ওদিককার পানিগুলো আমাদের এদিক দিয়েই নামবে। তবে নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এতে শুধুমাত্র নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চলগুলোই প্লাবিত হবে।
বগুড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, এখনও পর্যন্ত উপজেলা থেকে আমাদের কাছে বন্যা সংক্রান্ত কোন রিপোর্ট আসেনি। আজকে দেখি বিকাল পর্যন্ত কি হয়। যেহেতু রিপোর্ট এখনও পাইনি সেহেতু ত্রাণের কোন বরাদ্দও করা হয়নি। তবে আমাদের সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।
সূত্র : রাইজিংবিডি
এম এস, ১৯ জুন