দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রত্যাশা রুশ দূতের
ঢাকা, ১১ জুন – বাংলাদেশ-রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের আরও উন্নয়ন প্রত্যাশা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মানতিতস্কি। তিনি বলেন, ২০২১ সালে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ থেকে আরএমজির পাশাপাশি হিমায়িত মৎস্য ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ২০১০ সাল থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। যার ফলে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গ্যাস কূপ খনন ইত্যাদি খাতে রাশিয়ান বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়া শিক্ষা ও গবেষণা খাতেও সহযোগিতা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাশিয়া বাংলাদেশের কাছে এলএনজি ও ক্রুড অয়েল সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছে। সার, গম ইত্যাদি পণ্য রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণে রপ্তানি করা হয়। ২০২১ সালে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ থেকে আরএমজির পাশাপাশি হিমায়িত মৎস্য ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে লজিস্টিকস, ব্যাংকিং চ্যানেল, ইত্যাদি সমস্যা বিদ্যমান। যা উভয়দেশের ব্যবসায়ীরা পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং নিজ নিজ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধান করতে পারে।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ-রাশিয়া অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের সূচনা হয়, যা ২০১৭ সালে উভয় সরকারের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিশন গঠনে চুক্তির মাধ্যম বাণিজ্য, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও কারিগরি খাতে সহযোগিতাকে প্রাধান্য দেয়। ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে পণ্য বহুমুখীকরণ এবং প্রতিবন্ধকতাগুলো দূরীকরণে এ চুক্তি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম খাদ্য পণ্য, গম ও সার সরবরাহকারী দেশ। তবে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে উভয়দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি এ অবস্থার উন্নয়নে ব্যবসা সহজীকরণ ও বেসরকারি খাতের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় অন্যান্য বক্তারা কাস্টম ক্লিয়ারেন্স সহজীকরণ, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, ব্যাংকিং চ্যানেল ও আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপন, নিয়মিত বাণিজ্য প্রতিনিধিদল বিনিময়, বাংলাদেশে রাশিয়ান ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি ও ইকুইপমেন্ট প্রদর্শনের আয়োজন, দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন, রাশিয়ান মার্কেটে প্রবেশ উপযোগী প্রশিক্ষণ ও গাইড প্রদান, বাংলাদেশ থেকে শ্রম শক্তি রপ্তানি, স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা কেন্দ্র ও আধুনিক প্রযুক্তিতে সহযোগিতার ভিত্তিতে মেডিকেল সরঞ্জাম উৎপাদন, স্টোরেজ সুবিধা বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের জন্য ন্যূনতম এক বছরের মাল্টিপল ভিসা চালু করাসহ বিভিন্ন খাতের ওপর আলোচনা করেন।
মতবিনিময় সভায় রাশিয়ান ফেডারেশনের অনারারী কনসাল স্থপতি আশিক ইমরান, চেম্বার পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর) ও অঞ্জন শেখর দাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এম এস, ১১ জুন